হার দিয়ে সুপার এইট পর্ব শুরু বাংলাদেশের

বৃষ্টি আইনে অস্ট্রেলিয়া জিতল ২৮ রানে

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শুক্রবার , ২১ জুন, ২০২৪ at ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ

যথারীতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হাসছেনা বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাট। ক্রমাগত ব্যর্থতার কারনে বাদ পড়েন সৌম্য সরকার। দলে পরিবর্তণ এলেও বাংলাদেশের ভাগ্যে কোন পরিবর্তণ আসেনি।

আর মাঝেও একটা আশার ইঙ্গিত ছিল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর রানে ফেরা। কিন্তু দিন শেষে সেই হতাশার বৃত্তেই বন্দী থাকতে হলো বাংলাদেশকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্বের নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে বাংলাদেশ।

যদিও অস্ট্রেলিয়ার জয়টা বৃষ্টি আইনে ২৮ রানে। তবে বাংলাদেশের ১৪০ রানের যে পুঁজি ছিল তা পুরো ম্যাচ হলেও আনায়াসেই টপকে যেতো অস্ট্রেলিয়া। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পাওয়ার প্লেতে কিভাবে খেলতে হয় সে ফারাকটা বুঝিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটাররা।

যা পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। আর তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারায় বাংলাদেশ। এবারের বিশ্¦কাপে প্যাট কামিন্সের হ্যাটট্রিক, অসি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের খুনে মেজাজের ব্যাটিং অস্ট্রেলিয়াকে সুপার এইটের প্রথম ম্যাচেই জয় পাইয়ে দেয়। এই পর্বে বাংলাদেশের অপর দুই প্রতিপক্ষ ভারত এবং আফগানিস্তান।

অ্যান্টিগায় টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দল এবং ব্যক্তিগত রানের খাতা খোলার আগেই ফিরেন তানজিদ তামিম। মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হন তামিম। এরপর দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

রানের গতি কম হলেও দেখেশুনে ব্যাট করার চেষ্টা করেন দুজন। জুটি গড়েন ৪৮ বলে ৫৮ রানের। কিন্তু অনেকদিন থেকেই রান না পাওয়া লিটন পারলেননা ইনিংস বড় করতে। ২৫ বলে ১৬ রান করা লিটনকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙ্গেন এডাম জাম্পা।

একটু মেরে খেলার আশায় ব্যাটিংয়ে প্রমোশন দিয়ে রিশাদ হোসেনকে পাঠানো হয় চার নাম্বারে। তাতে কোনো লাভই হলো না বাংলাদেশের। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ডাউন দ্য উইকেটে মারতে গিয়ে শট থার্ডম্যান অঞ্চলে জাম্পার হাতে ক্যাচ হন তিনি।

৪ বল খেলে মাত্র ২ রান করেন রিশাদ। লম্বা সময় রান খরায় ভুগতে থাকা অধিনায়ক শান্ত ভাল কিছু করার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। কিন্তু তিনিও ফিরলেন হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে। ৩৬ বলে ৫টি চার এবং একটি একটি ছক্কায় ৪১ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

দলের প্রয়োজনে আবার ব্যর্থ হলেন সাকিব। পারলেননা দলকে টানতে। ১০ বলে ৮ রান করে স্টয়নিসের শিকার হন সাকিব। তবে যথারীতি চওড়া তরুন তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাট। অসি বোলারদের উপর তোপ দাগাচ্ছিলেন হৃদয়। ধারাবাহিক ভাল ব্যাটিং করতে থাকা হৃদয় এই ম্যাচেও এগুচ্ছিলেন চেনা রূপে।

কিন্তু ১৮ তম ওভারে এসে দারুন এক হ্যাটট্রিক তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে বেশিদুর এগুতে দিলেননা প্যাট কামিন্স। ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে প্যাট কামিন্সকে পুল করতে গিয়ে বোল্ড হন ৩ বলে ২ রান করা মাহমুদউল্লাহ।

পরের বলেই থার্ড ম্যান অঞ্চলে জাম্পার হাতে ক্যাচ দেন চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে খেলতে নামা শেখ মেহেদী। তখনো আশা হৃদয়ের ব্যাটে। কিন্তু হ্যাটট্রিক চান্স নিয়ে ২০তম ওভার করতে আসেন কামিন্স।

প্রথম বলেই হৃদয়ের উইকেট তুলে নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সপ্তম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন কামিন্স। যেখানে প্রথম হ্যাটট্রিকটা করেছিলেন তারই স্বদেশী ব্রেট লি। সেটাও বাংলাদেশেল বিপক্ষে ২০০৭ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।

২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন হৃদয়। যেখানে তিনি ২টি করে এবং ছক্কা মেরেছেন। শেষ দিকে ৭ বলে ১৩ রান করে বাংলাদেশকে ১৪০ রানে পৌছে দেন তাসকিন। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন প্যাট কামিন্স।
১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার এবং ট্রেভিস হেড মিলে মাত্র ৬.৫ ওভারে ৬৫ রান তুলে নেন।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শুরুর দিকে বৃষ্টির আক্রমন দেখেই হয়তো দুই অসি ওপেনার দ্রুত রান তোলার পথে হাটার চেষ্টা করেন। ২১ বলে ৩১ রান করা হেড়কে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন রিশাদ হোসেন। নিজের পরের ওভারে মিচেল মার্শকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান রিশাদ।

ওয়ার্নার এবং মেক্সওয়েল মিলে রানের চাকা দ্রুত ঘুরানোর চেষ্টা করেন। ১১.২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান যখন ২ উইকেটে ১০০ তখন আবার বৃষ্টি নামে। এরপর আর খেলঅ শুরু করা যায়নি। তখন ডাকওয়ার্থ/ লুইস পদ্ধতিতে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ৭২ রান। অর্থাৎ ২৮ রানে এগিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

আর সে ২৮ রানেই জিতেছে অসিরা। আর বাংলাদেশ সুপার এইট পর্ব শুরু করল হার দিয়ে। ডেভিড ওয়ার্নার অপরাজিত ছিলেন ৩৫ বলে ৫৩ রান করে। মেক্সওয়েল অপরাজিত ছিলেন ৬ বলে ১৪ রান করে। বাংলাদেশের রিশাদ হোসেন নিয়েছেন ২ উইকেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজয়ের জন্য অস্টেলিয়ার প্রয়োজন ৪১, আবারও বৃষ্টিতে বন্ধ খেলা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে পরোয়ানাভুক্ত ২ আসামি ‌গ্রেফতার