ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও অস্ট্রেরিয়াকে হারানোর সুযোগ পেয়েছিল পাকিস্তান। সে ম্যাচে নিজেরা ২০৭ রান করলেও অস্ট্রেলিয়ার সে রান টপকাতে হারাতে হয়েছে ৮ উইকেট। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে এসে স্বাগতিকদের একেবারে উড়িয়ে দিল পাকিস্তান। পেসার হারিস রউফের আগুন ঝরানো বোলিং এরপর দুই পাকিস্তানি ওপেনার সাইম আইয়ুব ও আব্দুল্লাহ শাফিকের ঝড়ো ব্যাটিং পাকিস্তান পেয়েছে ৯ উইকেটের বিশাল জয়। আর এই জয়েল ফলে সিরিজে সমতা ফেরাল পাকিস্তান। ২০১৭ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জয় পেল পাকিস্তান। রউফ আর শাহিন শাহ আফ্রিদির দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩৫ ওভারেই ১৬৩ রান করে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
বল হাতেও তারা ন্যূনতম লড়াই করতে পারেনি। সাইম ও শাফিকের ১৩৭ রানের উদ্বোধনী জুটির সৌজন্যে ২৬.৩ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। গতি আর সুইংয়ের মিশেলে আগুনে বোলিংয়ে ২৯ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নেন রউফ। ম্যাচ সেরাও হন তিনি। আর সফল রান তাড়ায় ৮২ রান করেন সাইম। ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন আরেক ওপেনার শাফিক। টস হেরে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেরিয়াকে প্রথম ধাক্কাটা দেন শাহীন আফ্রিদি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে অসি ওপেনার জেইক ফ্রেজার–ম্যাকগার্ককে ফেরান আফ্রিদি। ২৫ বলে ১৮ রান করেন তিনি। ৪১ রানের মাথায় আরেক ওপেনার ম্যাথু শর্টকেও ফেরান আফ্রিদি। এরপর স্টিভেন স্মিথ ও জশ ইংলিসের জুটি গড়ার চেষ্টা থামান রউফ। ইংলিসকে ফেরান তিনি লেগ স্টাম্প ঘেঁষা গতিময় ডেলিভারিতে। নিজের পরের ওভারে তিনি ফেরান মার্নাস লাবুশেনকে। আরেক প্রান্তে দারুণ খেলতে থাকা স্টিভেন স্মিথকে ৩৫ রানে বিদায় করেন হাসনাইন। এরপর রউফ একে একে ফেরান অ্যারন হার্ডি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। পরে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে আউট করে তিনি পূর্ণ করেন পাঁচ উইকেট। অ্যাডাম জ্যাম্পার স্টাম্প ভেঙে প্রতিপক্ষের ইনিংস ১৬৩ রানে গুটিয়ে দেন আফ্রিদি। ২ উইকেটে ৭৯ রান ইনিংসের ১৫ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। তাদের ইনিংসে ৪০ রানের কোনো জুটিও হয়নি। সর্বোচ্চ ৩৮ রান আসে স্মিথ ও ইংলিসের জুটিতে। আর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান স্মিথ।
২৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন হারিস রউফ। অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচ উইকেট নেওয়া পাকিস্তানের নবম বোলার রউফ। সবশেষ ২০১৭ সালে পাঁচ শিকার ধরেছিলেন হাসান আলি। রউফের এই পাঁচ উইকেটের চারটিতেই ক্যাচ নেন রিজওয়ান। সঙ্গে আরও দুটি ক্যাচ মিলিয়ে তিনি স্পর্শ করেন বিশ্বরেকর্ড। এক ওয়ানডেতে ছয় ডিসমিসালের সপ্তদশ নজির এটি। তবে পাকিস্তানের হয়ে আগে করতে পেরেছিলেন কেবল সারফারাজ আহমেদ। অস্ট্রেলিয়াকে অল্পে আটকে দেওয়ায় পেসার আফ্রিদির অবদানও কম নয়। আট ওভারে ২৬ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন তিনি। লক্ষ্য ছোট হলেও রান তাড়ায় শুরুতে বেশ সতর্ক ছিলেন সাইম ও শাফিক। এক পর্যায়ে ২৭ বলে সাইমের রান ছিল মাত্র ৭। এরপর জশ হেইজেলউডের বলে স্কয়ার ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরে হাত খোলেন তিনি। প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ককে ছক্কায় ওড়ানোর পর জ্যাম্পার বলও উড়িয়ে সীমানার বাইরে ফেলেন তিনি।
৫২ বলে অর্ধশতক ছোঁয়ার পর, ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির আশাও জাগান সাইম। শেষ পর্যন্ত যদিও তা হয়নি। জ্যাম্পার বলে ফেরার আগে ৭১ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮২ রান করেন তিনি। এরপর বাবর আজমকে নিয়ে দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন ৬৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৪ রান করা শাফিক। দুই দলের স্কোর যখন সমান তখণ জ্যাম্পার বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করেন সাবেক অধিনায়ক বাবর। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আগামী রোববার পার্থে মুখোমুখি হবে দল দুটি।