যে যাওয়ার সে চলেই যায়। কিন্তু যে থেকে যায় তার কি অন্তর যন্ত্রণা কেবল সেই জানে। কি বিষাদ তাকে ছুঁয়ে থাকে অহর্নিশ। মুখটা দেখলেই বুঝা যায়। জানতে হয় না কেমন আছে কিভাবে আছে। পৃথিবীর সব আধার যেন তার চারপাশ জুড়ে। আলো নেই, আশা নেই, ভালোবাসা নেই। শুধুই কান্না শুধুই হতাশা। প্রিয় মানুষ টির জন্য বুক ফাটা কান্না আর দীর্ঘশ্বাস। আজ দেখে আসলাম আমাদের চম্পা আপাকে। নার্গিস আয়েশা চম্পা। খুবই প্রাণবন্ত উচ্ছল এক মানুষ। জীবন সঙ্গী হিসাবে পেয়েছিলেন এমন এক মানুষকে যে আগলে রাখতো পুরো পরিবার কে। যতই ঝড়-ঝাপটা আসুক জীবনে। আর চম্পা মানেই তার কাছে এক আলাদা আখ্যান। ভালোবাসতো প্রচুর। এসব ব’লে বলে আমাদের -হাসতোও আপা। জীবন যুদ্ধে হার না মানা মানুষটি হেরে গেলো মৃত্যুর কাছে। এটাই অমোঘ নিয়ম। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হেরে যাবেন উনিও কি ভেবেছিলেন, চম্পা আপাও কি ভেবছিলো। অথৈই কান্নার বাণ দিয়ে চলে যাবে ওপারে। নাক ফুল ছাড়া আপাকে কেমন অচেনা লাগছিলো। অচেনা লাগছিলো আরও অনেক কিছুতে।
আগের মতো উচ্ছলতা প্রাণচাঞ্চল্য নেই। শুধুই চোখ দুটোয় প্রিয় জন হারানোর বেদনা। তিনমাস হতে চললো জীবনের সবচেয়ে আপন কাছের মানুষ টিকে হারিয়েছেন। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য ও ভুলতে পারছেন না তাকে। প্রতিটি ক্ষণ পিছন ফিরে তাকিয়ে খুঁজে মানুষটিকে। যে তাকে মধুর এক ডাকে ডাকতো। সে ডাকটা শুনেনা অনেক দিন হলো। তবুও কান পেতে থাকে এই বুঝি ফিরে আসলো লোকটা। আসেনা, আসে না, কোনদিন আর ফিরবে না লোকটা। এটা মনে হতেই দুনিয়াটা নিছকই মনে হয়। এ কেমন খেলা তোমার আল্লাহ। মৃত্যু অবধি এ শোক সয়ে যাওয়ার ক্ষমতা দাও তুমি তাকে।
চোখ বুজলেই আপার সে মুখ, সে তমিশ্রার অন্ধকার মাখা মুখটা দেখি। বুকের ভিতরটা হু হু করে উঠে। আমৃত্যু এ ভার বয়ে বেড়াতে হবে তাকে। নিঃসঙ্গতা কতটা ভয়ানক অসুখ আগে কি টের পেয়েছিল উনি? এখন টের পাচ্ছে ভীষণভাবে। একা করে দিয়ে প্রিয় মানুষ টি যে তার ঘুমুচ্ছে। আপাকে আল্লাহ ধৈর্য্য ধরার তৌফিক দান করুক। আর দুলাভাই কে বেহেশত নসীব করুক- আমীন।