হামাসের নতুন নেতা আসতে পারেন গাজার বাইরে থেকে

সিনওয়ারের মৃত্যু

| রবিবার , ২০ অক্টোবর, ২০২৪ at ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস সম্ভবত ইয়াহিয়া সিনওয়ারের স্থানে তাদের শীর্ষ নেতা হিসেবে গাজার বাইরে থেকে নতুন একজন রাজনৈতিক নেতাকে নির্বাচিত করবে। তবে সদ্য নিহত সিনওয়ারের ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনায় আরও বড় ভূমিকা গ্রহণ করবেন বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

নতুন নেতা নির্বাচনের আলোচনায় হামাসকে অবশ্য তার প্রধান সমর্থক ইরানের পছন্দগুলোর পাশাপাশি পারস্য উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্র কাতারের স্বার্থও বিবেচনা করতে হবে। গোষ্ঠীটির পলিটব্যুরোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার মতো প্রধান প্রার্থীদের সবাই বর্তমানে কাতারে বসবাস করছেন। খবর বিডিনিউজের।

সিনওয়ারকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামাসের নজিরবিহীন হামলার একজন মাস্টারমাইন্ড মনে করা হয়। এই হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই গাজায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল, যা গাজা যুদ্ধের সূচনা ঘটায়। সিনওয়ার গত বুধবার গাজার রাফা শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন।

তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো হামাস তাদের শীর্ষ নেতাকে হারিয়েছে। এর আগে জুলাইয়ে গোষ্ঠীটির সাবেক প্রধান ইসমাইল হানিয়া তেহরানে এক গুপ্ত হামলায় নিহত হন। ওই হামলাটিও প্রায় নিশ্চিতভাবে ইসরায়েল চালিয়েছিল।

রয়টার্স জানায়, হানিয়ার পর দায়িত্ব পাওয়া সিনওয়ার একইসঙ্গে গাজার সামরিক ও রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। কিন্তু এবার সেরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের তীব্র আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে হামাস, তাদের হাজার হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন এবং গাজা ও গাজার বাইরে তাদের জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ বিপর্যয় থেকে হামাস কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে তা পরিষ্কার নয়। সিনওয়ারের উপপ্রধান কর্মকর্তা খলিল আলহাইয়াকে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসাবে দেখা হচ্ছে। তিনি গত শুক্রবার সিনওয়ার হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের ফেরত দেওয়া হবে না।

হামাসের দ্রুত এবং দক্ষতার সাথে নেতা নির্বাচনের ইতিহাস রয়েছে। নতুন নেতা ঘোষণার দায়িত্ব নিয়েছে গোষ্ঠীটির সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী শীর্ষ সংস্থা, শুরা কাউন্সিল। শুরা কাউন্সিল গাজা, পশ্চিম তীর, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ও প্রবাসে থাকা সব ফিলিস্তিনির প্রতিনিধিত্ব করে। এর অর্থ হামাসের নতুন প্রধান গাজায় না থাকলেও যুদ্ধবিরতি আলোচনায় যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন। হামাসের একটি সূত্র ও বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হামাসের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হায়া নতুন নেতা হওয়ার আলোচনায় থাকলেও তার পাশাপাশি হানিয়ার পূর্বসূরি খালেদ মেশাল এবং শুরা কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের স্বল্প পরিচিত নেতা মোহাম্মদ দারবিশও বিবেচনায় আছেন। সূত্রটি জানায়, হামাস তাদের নতুন নেতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে কাতারকে অবহিত করতে হবে তারপর আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের সরকারগুলোকে জানাতে হবে।

মিশরের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদপত্র আলআহরামের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ফিলিস্তিন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আশরাফ আবুয়েলহুল বলেছেন, ইরান হামাসের সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র। দেশটি অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে গোষ্ঠীটিকে সমর্থন করে আসছে। তাই অনেকটা তাদের উপরই নির্ভর করছে সিনওয়ারের উত্তরসূরি কে হবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিনওয়ারের মাথায় গুলি করা হয়, কেটে নেওয়া হয় আঙুল
পরবর্তী নিবন্ধহামাসকে সন্ত্রাসী বলায় সৌদির টিভি অফিসে হামলা