নগরীর জিমনেসিয়াম মাঠে আয়োজিত একুশের বইমেলায় দুপুরে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যেই আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য মো. রুমেলসহ চার তরুণ সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রুমেল ধরা পড়ে যাওয়ায় বাকি তিনজন সটকে পড়ে। হামলার কারণ ‘তাগুত’ বা সীমা লঙ্ঘনকারীদের আয়োজিত বইমেলা আনসার আল ইসলাম মেনে নিতে পারে না। একুশের বইমেলা থেকে আটক রুমেলকে গ্রেপ্তারের পর সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে রুমেলকে আটকের পর তার থেকে হামলা করার মতো কিছু পাওয়া যায় নি। তার কাছে বেশ কিছু উগ্র জিহাদী বক্তব্য সম্বলিত প্রচারপত্র ও ব্যানার পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার মো. রুমেল (২০) নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। বর্তমানে রুমেল নগরীর চান্দগাঁও থানার জিন্নাত আলী মসজিদ সংলগ্ন বড় বাড়িতে থাকতো। সেখানে একটি কারখানায় সে কাজ করতো। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এক উপ পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৮, ৯(৩), ১১ ও ১৩ ধারায় রুমেলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে রুমেলের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। রুমেলের দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেব শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। পরে আনসার আল ইসলামের সদস্য রুমেলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা থেকে আসা অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, একুশে ফেব্রুয়ারি পালন উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারে ফুল দেয়াকে ‘স্তম্ভ’ পূজা মনে করে আনসার আল ইসলাম। একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে যারা বইমেলার আয়োজন করেছে তারা ‘তাগুত’ অর্থাৎ সীমা লঙ্ঘনকারী। তাগুতদের আয়োজিত বইমেলায় হামলার উদ্দেশ্যেই তিনি এসেছিলেন। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগীর এই হামলায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুমেল আরও জানিয়েছেন, তাদের আরও লক্ষ্য আনসার আল ইসলামের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ও গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে শরিয়াহ ও খিলাফতভিত্তিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করা। অপ্রচলিত মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে তারা নিজেদের মধ্যে সংগঠনের সব তথ্য আদান-প্রদান করেন।
সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আহমেদ পেয়ার বলেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি বই মেলার আশপাশে পোশাকে ও সাদা পোশাকে ফোর্স মোতায়েন ছিল। বই মেলার প্রবেশ পথেই সন্দেহজনক আচরণের কারণে রুমেলকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে তাকে আটক করলে
তার কাছ থেকে বেশকিছু উগ্র জিহাদী বক্তব্যসম্বলিত প্রচারপত্র ও ব্যানার পাওয়া যায়। পরে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করে। মূলত বই মেলাতে হামলার জন্যই সেখানে গিয়েছিল।