হাবিবউল্লাহ বাহার কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল খুন

| মঙ্গলবার , ১১ মার্চ, ২০২৫ at ১০:২৫ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর উত্তরখান থানাধীন পুরান পাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় খুন হয়েছেন শান্তিনগরের হাবিবউল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুর রহমান ভুঁইয়া। গতকাল সোমবার ভোরের দিকে কোনো এক সময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানান, ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ কমিশনারের দায়িত্বে থাকা আহাম্মদ আলী।

তিনি বলেন, তাকে ছুরিকাঘাত করে বাসার বাথরুমে আটকে রাখা হয়। পরে তিনি কোনরকমে বাথরুমের দরজা ভেঙে বের হয়ে এসে চিৎকার করতে থাকেন। ভোরে তেমন লোক ছিল না রাস্তায়। এরপরও একজন শুনতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ কর্মকর্তা আহাম্মদ আলী বলেন, ওই বাসায় সাইফুর রহমান একাই থাকতেন। দুদিন আগে তার বাসায় একজন নারী ও একজন পুরুষ এসে উঠেছিলেন। পুলিশ তাদের খোঁজ করছে। গণিতের শিক্ষক সাইফুর রহমান হাবিবউল্লাহ বাহার কলেজের ভারপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন। এ শিক্ষকের হত্যাকাণ্ডের খবরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে জড়ো হন নিহতের স্বজন, কলেজের ছাত্র ও শিক্ষকরা। খবর বিডিনিউজের।

নিহতের বড় ভাই মুজাহিদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, সাইফুরের বাসা শান্তিনগরে। সেখানে দুই ছেলেসহ তার স্ত্রী থাকেন। তবে কয়েক মাস ধরে সাইফুর উত্তরখান এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকছিলেন বলে শুনেছেন। তবে সেখানে কখনও যাননি। এ নিয়ে সাইফুলের স্ত্রী সাদিয়া রহমান বা ছেলেরা তাকে কখনও কিছু জানাননি বা অভিযোগ করেননি।

তার ভাষ্য, পারিবারিক আলোচনায় বিষয়টা নিয়ে কখনও কথা হয়নি। উত্তর খানে সাইফুলের স্ত্রীর নামে আড়াই কাঠা জমি রয়েছে বলে সবাই জানতেন। সেই জমিটি বেদখল হয়ে গিয়েছিল। তিনচার মাস আগে জমিটি উদ্ধার করার তথ্য দিয়েছিলেন। সাইফুলের বড় ভাই মনে করছেন, এ কারণে সাইফুর উত্তরখানে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন। মুজাহিদুর বলেন, তারা ছয় ভাইয়ের মধ্যে সাইফুর ৫ নম্বর। তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাকির মাহমুদ এসেছিলেন শিক্ষকের মৃত্যুর খবর শুনে। তিনি বলেন, তারা জানতেন সাইফুরের বাসা শান্তিনগরের পীর সাহেবের গলিতে। মৃত্যুর পর তারা জানতে পারেন তিনি উত্তরখানে ভাড়া বাসায় থাকছিলেন। জাকির মাহমুদ ও তার বন্ধুদের দাবি, বিষয়টি নিয়ে নিহত সাইফুরের স্ত্রীর সঙ্গে হাসপাতালে কথা বলেছেন তারা।

তাদের সঙ্গে থাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র রিয়াজুল আলম দাবি করেন, নিহত সাইফুরের স্ত্রী ছাত্রদের বলেছেন, গত তিনচার মাস ধরে সাইফুর নিয়মিত বাসায় আসছিলেন না। মাঝে মাঝে দু এক ঘণ্টার জন্য এলেও আবার চলে যেতেন। রাতে কোথায় থাকেন জানতে চাইলে তিনি স্ত্রীকে বলেছিলেন তিনি বন্ধুদের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকেন। এ নিয়ে সাইফুরের স্ত্রী সাদিয়া রহমানের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বিকালের দিকে কলেজের শিক্ষার্থীদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রথমে শিক্ষকের মৃত্যুর খবর পান তারা। সেখানে রক্তাক্ত একটি ছবিও আপলোড করেন কেউ একজন। রিয়াজুল আলম বলেন, লাশ মর্গে ঢোকানোর আগে তারা দেখেছেন। সাইফুরের দুই হাতেই ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গলার বাম পাশে বিরাট এক জখম রয়েছে। পুলিশ বলেছে, লাশ মর্গে আছে। সকালে ময়নাতদন্ত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন সময়সূচিতে ট্রেন চলাচল শুরু
পরবর্তী নিবন্ধপ্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলামের পদত্যাগ