বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটা। চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নিচতলার গেটে হাতকড়া পরা এক যুবককে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন চারজন পুলিশ সদস্য। কাছে আসতেই দেখা গেলো হাতকড়া লাগানো অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলছেন ওই যুবক। খবর বাংলানিউজের।
প্রায় ১০ মিনিট অবস্থান করে দেখা গেছে, বেশ কিছুক্ষণ ধরে কথা বলছেন হাতে হাতকড়া লাগানো সেই যুবক। আরও কয়েকটি নাম্বারে কথা বলেন পর্যায়ক্রমে। হাতকড়া পরা ওই যুবককে মোবাইল নাম্বার ডায়াল করে প্রতিবার হাতে ধরিয়ে দেন পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা এক পুলিশ সদস্য। হাতকড়া পরা সেই যুবককে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা চার পুুলিশ সদস্যের মধ্যে একজনের নেমপ্লেট দেখা গেছে। তিনি ফটিকছড়ি থানার এসআই সঞ্জয়। বাকি তিনজনের নেমপ্লেট জ্যাকেট পরে থাকার কারণে দেখা যায়নি। জেলা পুলিশের হাজতখানায় নেয়ার পর ওই যুবকের পরিচয় জানা যায়। সেই যুবকের নাম মুহাম্মদ হাসান প্রকাশ পাঠান হাসান (৩৫)। তিনি ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার পাঠান বাড়ির নুরুচ্ছফার ছেলে। পাঠান হাসান ৪ জানুয়ারি ফটিকছড়ি থানার একটি মামলার এক নম্বর আসামি। মামলা নম্বর: ২ (০১) ২০২১। ফটিকছড়ি থানার এসআই সঞ্জয় বলেন, পাঠান হাসান ফটিকছড়িতে মারামারির মামলার এক নম্বর আসামি। তাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে কীভাবে আসামি মোবাইল ফোনে কথা বলেন- জানতে চাইলে এসআই সঞ্জয় বলেন, মুহাম্মদ হাসান মোবাইলে কথা বলেছে। ওই মামলায় আরও কিছু আসামি আছে যাদের ধরা হয়নি। টেকনিকালি আমরা যদি আসামি ধরতে পারি সে কারনে কথা বলতে দেয়া। আসামি ধরার খুব প্রেসার আছে।
আসামিকে মোবাইলে কথা বলতে দেয়ার নিয়ম আছে কী না জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চান এসআই সঞ্জয়। তিনি অন্যকাজে কোর্টে এসেছেন বলে দাবি করেন তখন।
এবিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এইচএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, আসামি হাসানকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমি তো সঙ্গে যাইনি। এএসআই আবদুর রশিদসহ অন্যরা গেছেন। মোবাইলে কথা বলতে দেয়ার নিয়ম নেই। যারা কাজটি করেছেন তারা ঠিক করেননি। তিনি বলেন, আসামি আদালতে বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপরের দায়িত্ব আমাদের নয়। ৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, পাঠান হাসান একজন চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী। নানুপুর এলাকায় জমির দখল নিয়ে মারামারি ও গোলাগুলির ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। বুধবার দিবাগত রাতে শুলকবহর এলাকা থেকে হাসানকে আটকের পর ফটিকছড়ি থানায় হস্তান্তর করা হয়।