হাটহাজারীতে গতকাল সকালে মহাসড়ক অবরোধ করেছে হেফাজত ইসলাম। পরে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। হাটহাজারী উপজেলা শাখার ডাকা এ অবরোধ বেলা প্রায় সাড়ে এগারটার দিকে প্রত্যাহার করে নেয় তারা।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকালের দিকে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী কমিটির সদস্য সন্দ্বীপ উপজেলার কালাপানিয়া এলাকার আব্দুল কাদের চৌধুরী বাড়ির আবুল মহসীন চৌধুরীর পুত্র মাওলানা সোহেল চৌধুরী রাউজান এলাকা থেকে নিজ মোটরসাইকেল চালিয়ে হাটহাজারী ফেরার পথে ওই উপজেলার নবীন সেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় এলে চট্টগ্রাম রাঙামাটি সড়কের উপর পেছন থেকে আসা একটি দ্রুত গতির যাত্রীবাহী বাস (চট্টমেট্টো ঘ ১১–১৯৮৫) তার মোটরসাইকেলকে সজোরে ধাক্কা দেয়, এতে গুরুতর আহত হন ওই হেফাজত নেতা। পরে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর ঘাতক বাসের চালক জানে আলম (৪০) কে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা। পরে বুধবার সকালের দিকে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে চট্টগ্রাম নাজিরহাট ও চট্টগ্রাম রাঙামাটি সড়কে অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধের ফলে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যে বের হওয়া জনসাধারণ। এসময় হেফাজতকর্মীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও পৌরসভার ত্রিবেণী মোড় ও মাদ্রাসার উত্তর পাশে হাটহাজারী নাজিরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে উপর ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন আটকে দেয়। পরে বেলা সাড়ে দশটার দিকে প্রশাসনের সাথে হেফাজত নেতাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে অবরোধকারীরা ত্রিবেণী মোড়ে গিয়ে অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এর পর ধীরে ধীরে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
হাটহাজারী মডেল থানায় প্রশাসনের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মু.আবদুল্লাহ আল মুমিন, হাটহাজারী সার্কেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো.তারেক আজিজ, হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মনজুর কাদের ভুঁইয়া, বাস মালিক সমিতি ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মু.আবদুল্লাহ আল মুমিন ও হাটহাজারী সার্কেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো.তারেক আজিজ জানান, নিহতের পরিবারকে বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকা ক্যাশ দেয়া হবে। এবং সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ আদায় করার ব্যবস্থা ও উপজেলা প্রশাসন থেকে নিহতের পরিবারের পাশে থেকে সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।