হাটহাজারীর সন্দ্বীপ কলোনিতে মেয়ের অপহরণ ও জোরপূর্বক বিয়ের ঘটনা নিয়ে আয়োজিত সালিশি বৈঠকে ফখরুল ইসলাম (৫৮) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অবশেষে নিহতের ছেলে বাদি হয়ে মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল রবিবার হাটহাজারী মডেল থানা কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে মামলা দায়েরের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছে। এর আগে শনিবার রাতে ভিকটিম নিহত ফখরুল ইসলাম এর ছোট ছেলে রবিন বাদী হয়ে সুনির্দিষ্ট ৪ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে বিবাদী করে মামলাটি করা হয়।
জানা যায়, গত ২৭ জুলাই নিহত ফখরুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতুল মায়মুনা রুমিকে স্কুল থেকে ফেরার পথে রিফাত নামে এক যুবক ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নিয়ে যায় এবং সেখানে তাকে বিয়ের রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় জিডি করলে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এই ঘটনার নিষ্পত্তির জন্য গত শুক্রবার রাতে উভয় পক্ষকে নিয়ে একটি সালিশি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকের এক পর্যায়ে মেয়ের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনার সময় ছেলে ও মেয়ে পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মেয়ের বাবা সন্দ্বীপ উপজেলার মগধরা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের হুনজাল বাড়ির মৃত ফয়জুল মাওলার পুত্র ফখরুল ইসলামের ওপর (বর্তমান নিবাস হাটহাজারী থানাধীন চসিক ১ নম্বর ওয়ার্ডের সন্দ্বীপ কলোনির আমতলী এলাকা) হামলা চালানো হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে গত শনিবার রাতে উল্লিখিত আমতলী এলাকায় মরহুমের জানাযার নামাজ শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী রবিন জানান, গত শনিবার রাতে বাবার জানাযার নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আর কথা বলতে চাই না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাটহাজারী মডেল থানার উপ–পরিদর্শক আল আমিন জানান, ঘটনার পর পর গত শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা চাক্ষুষ সাক্ষী নুর আলম ও মুসলিম সহ কয়েকজনের কাছ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী তারেক আজিজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলেই আটক করা হবে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে পুলিশ মাঠে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।