৭ বছর আগে রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় রাঙ্গুনিয়ার সাবেক সাংসদ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদসহ ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৩০০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মমিনুন নেসা খানমের আদালতে মামলাটি করেন চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবদলের সহ দপ্তর সম্পাদক নাজিম উদ্দিন। বাদীর আইনজীবী আশরাফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসিকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় ৮৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। বাকি ২০০–৩০০ জন অজ্ঞাতনামা দেয়া হয়েছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানাকে এই প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। সাবেক পিপি এনামুল হক চৌধুরী, বারের বর্তমান সভাপতি নাজিম উদ্দীন চৌধুরীসহ আইনজীবী প্রতিনিধিদল মামলাটি দায়েরের সময় ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, মামলার আসামিদের মধ্যে অন্যতম হলেন সদ্য অপসারণ হওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চিশতি, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদার, সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইউনুচ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব ও সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদের ভাই খালেদ মাহমুদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আলম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিমুল গুপ্ত, বর্তমান সভাপতি রাসেল রাসু।
মামলার বাদী চট্টগ্রাম উত্তরজেলা যুবদলের সহ দপ্তর সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, তাদের কাছে পুরো রাঙ্গুনিয়ার মানুষ জিম্মি হয়ে গিয়েছিল। একটি দলের মহাসচিবের উপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলায় পুরো রাঙ্গুনিয়া তথা চট্টগ্রামের মানুষ স্তম্ভিত হলেও কোন প্রতিকার পাইনি। তাই এই মামলা করা হয়েছে। তাদের আইনের আওতায় এনে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা হোক।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৭ সালে রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে ১১৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। ওই বছরের ১৮ জুন পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন এবং ত্রাণ বিতরণ করতে রাঙ্গুনিয়া হয়ে রাঙামাটি যাচ্ছিল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতনিধিদলের গাড়িবহর। তারা উপজেলার ইছাখালী এলাকায় এলে লোহার রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে আহত হন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানসহ অনেকে। ভাংচুর করা হয়েছে বহরের ১০টি গাড়ি। পরে হামলার শিকার বিএনপির প্রতিনিধিদল রাঙামাটি না গিয়ে চট্টগ্রাম শহরে ফিরে যান। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ওই নেতাকর্মীরা এ ঘটনার জন্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদকে দায়ী করেন।