হাওলাদারের প্রলোভনের ফাঁদ

লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, অবশেষে গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৮ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ

নিজেকে আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক আব্দুছ ছালাম হাওলাদারকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), চট্টগ্রাম।

গত ৫ জুলাই নগরের ইপিজেড থানার আলিশাপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ছালাম হাওলাদার ঝালকাঠির রাজাপুর থানার পূর্ব ফুলোহার এলাকার মৃত আব্দুছ সাত্তারের ছেলে। র‌্যাব৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক নূরুল আবছার জানান, প্রতারক ছালাম হাওলাদার কাউকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রটোকল অফিসার, কাউকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রটোকল অফিসার আবার কম যোগ্যতা থাকায় একজনকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

জানা গেছে, ছালাম হাওলাদারের আপন বড় ভাই মো. আল আমিন সিইপিজেড এলাকার একটি গার্মেন্টসে স্যাম্পল মেকার হিসেবে চাকরি করেন। ভুক্তভোগীও একই গার্মেন্টসে স্যাম্পল মেকার পদে কর্মরত থাকায় আল আমিনের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত আসামি ছালামের সাথে ভিকটিমের পরিচয় হয়। আব্দুচ ছালাম হাওলাদার নিজেকে আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগী ভিকটিমকে একটি ভিজিটিং কার্ড প্রদান করেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তার পরিচিত লোক আছে এবং চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবে বলে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখায়। তখন ভিকটিম বলে তার ১৯ বছরের একটি ছেলে আছে কিন্তু তার এসএসসি পাসের সনদপত্র নেই। সে সময় ছালাম হাওলাদার বলেন, সেটা কোন ব্যাপার না। পরবর্তীতে ছালাম হাওলাদার ভিকটিমের ছেলেকে ঢাকা বিমানবন্দরে ৪র্থ শ্রেণীর সরকারী চাকরি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তার ছেলেকে এসএসসি পাসের সনদপত্রের ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বস্ত করে। ছালামের বড় ভাই তার সাথে দীর্ঘদিন চাকুরি করে বিধায় ভিকটিম তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে। পরবর্তীতে ছালাম হাওলাদার ভিকটিমের ছেলেকে চাকরি দেবে মর্মে পাঁচ লক্ষ ষাট হাজার টাকার একটি মৌখিক চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী ভিকটিম এর ছেলেকে ঢাকা বিমান বন্দরে চাকরি বাবদ গত ৬ জুলাই প্রথমে এক লক্ষ টাকা এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে সর্বমোট পাঁচ লক্ষ ষাট হাজার টাকা ছালাম হাওলাদারকে প্রদান করে। গত ২৯ নভেম্বর ছেলের চাকরি চূড়ান্ত হওয়ার কথা বলে ভিকটিম ও তার ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে যায় এবং চাকরি হবে বলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে একটি হোটেলে দীর্ঘ ১৭ দিন অবস্থান করার পর মোঃ আব্দুল ছালাম হাওলাদারের কোন খোঁজ না পেয়ে ভিকটিম ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামে চলে আসেন।

একইভাবে মোঃ রাসেল আহমেদকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের প্রটোকল অফিসারের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ছালাম হাওলাদার তার থেকে তিন লক্ষ বিশ হাজার টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয়।

এছাড়াও মোঃ আক্তার হোসেন নামে একজনকে ঢাকা বিমান বন্দরে প্রটোকল অফিসারের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ছালাম হাওলাদার বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।

র‌্যাব আরও জানায়, প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা যাবতীয় তথ্য প্রমাণসহ র‌্যাব৭ বরাবর একটি আবেদন করেন। আমরা তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ছালাম হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘুমধুমে বার্মিজ গরু জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে স্টাডি ইন ইন্ডিয়া এক্সপো শুরু