হলুদ দলে বিদ্রোহীর ছড়াছড়ি অংশ নিচ্ছে না সাদা দল

চবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ৮ ফেব্রুয়ারি

চবি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৮:৫৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষকদের মধ্যে প্রশাসন পন্থী ও প্রশাসন বিরোধী দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতিসাধারণ সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন থেকে সেটা আরও স্পষ্ট হয়। এবার আগামী নির্বাচনে দুই দিক থেকে দেওয়া হয়েছে পূর্ণ প্যানেল। এক্ষেত্রে আওয়ামীবামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দল থেকে ১১ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

 

এতে রয়েছেন প্রশাসন বিরোধী শিক্ষকরা। অপরদিকে হলুদ দলের সমর্থক হলেও দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন নিয়েছেন আরও ১৩ জন। প্রশাসনের পক্ষের প্রার্থীরা দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না জামায়াতবিএনপি সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল এবং বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।

বর্তমান সময়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হচ্ছে না, দলীয়ভাবে হচ্ছে বলে দাবি করেন সাদা দলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগে কোনো ধরনের নিয়ম মানা হচ্ছে না। যার কারণে নির্বাচন করার কোনো পরিস্থিতি নেই।

গত বুধবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এদিন ২৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও একজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ১১টি পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ২৪ জন প্রার্থী। আগামী ৩০ তারিখ প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার সুযোগ থাকবে। একই সাথে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৮ ফেব্রুয়ারি।

এ বিষয়ে চবি শিক্ষক সমিতির প্রধান নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর ড. মনির উদ্দিন বলেন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ১১ পদে মোট ২৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে তথ্য অসম্পূর্ণ থাকার কারণে একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। হলুদ দল থেকে মনোনীতরা হলেন, সভাপতি পদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, সহসভাপতি পদে নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলা উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ পদে একাউন্টিং বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলী আরশাদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর আবদুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুলতানা সুকন্যা বাশার।

এছাড়া সদস্য পদে হলুদ দলের মনোনীত প্রার্থী মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর এস এম সালামত উল্যা ভূঁইয়া, ওশানোগ্রাফী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী, ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌমিতা পাল, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম ও জেনেটিং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. লায়লা খালেদা।

হলুদ দলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী আজাদীকে বলেন, হলুদ দল থেকে এবার সর্বোচ্চ যোগ্যদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। যারা দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। ৩০ তারিখ পর্যন্ত তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় আছে। এরপর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো। আশা করি এর মধ্যে আমরা সমঝোতায় আসতে পারবো। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।

২৪ জনের বাকি যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের সবাই হলুদ দল সমর্থিত। তারা হলেন, সভাপতি পদে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুন এবং যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ।

সহসভাপতি পদে বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ। কোষাধ্যক্ষ পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মীর সাইফুদ্দীন খালেদ চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক পদে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. আদনান মান্নান।

এছাড়া সদস্য পদে রয়েছে, পালি বিভাগের প্রফেসর ড. জ্ঞান রত্ন শ্রমণ, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ঝুলন ধর, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম, ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেসের প্রফেসর ড. মো. দানেশ মিয়া, আইন বিভাগের প্রফেসর নির্মল কুমার সাহা, একই বিভাগের প্রফেসর ড. রকিবা নবী ও মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ।

জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আল আমীন বলেন, এখানে যত সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, তার অধিকাংশই রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ হয়েছে। তারা মেধা মননকে প্রাধান্য না দিয়ে রাজনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে, তাই আমরা কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। এটা আমাদের একপ্রকার প্রতিবাদ বলা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকবরস্থানে যুবকের ঝুলন্ত লাশ
পরবর্তী নিবন্ধসড়ক নিরাপত্তায় সিএমপির সাথে কাজ করবে জিআরএসপি