চকরিয়ার লাকি আক্তার বড় দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তিনি চাকরি করেন চট্টগ্রামের ফোর এইচ গ্রুপে, পোশাক কারখানায়। নিয়মিত বেতন পান মোবাইল ওয়ালেটে। শহরে যখন থাকেন, তখন সমস্যা হয় না। কিন্তু এবার তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে চলে গেছেন চকরিয়ায়। ওই মোবাইল ওয়ালেট প্রতিষ্ঠানের কোনো এজেন্ট তার বাড়ির আশেপাশে নেই। তাহলে তিনি এই ছুটির ভাতাটা কিভাবে পাবেন?
লাকির ঘুম নষ্ট করে দেওয়া এই দুশ্চিন্তা মেটাতে হাজির হলো বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস নগদ। ফোর এইচ গ্রুপের সাথে নগদের চুক্তি হলো। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়া সকল কর্মীর ভাতা বিতরণ করবে নগদ। লাকি আক্তার হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। কারণ, তার বাড়ির কাছেই নগদের উদ্যোক্তা আছেন। হাসিমুখে তিনি বললেন, ভাগ্য ভালা, নগদ দিয়ারে টিয়্যা পাই। নিজে হাডি জাই টিয়্যা তুলি আইন্নি। আর কোম্পানির লগে নগদ মিলিয়্যারে বহুত উপকার গইয়জ্জ্যে। এটা লাকির একার গল্প নয়। গত তিন মাসে ফোর এইচ গ্রুপের অন্তত ৫৪০ জন নারী পোশাক শ্রমিক এই সুবিধা পেয়েছেন নগদের কাছ থেকে।
ফোর এইচ গ্রুপ চট্টগ্রামের কর্মীবান্ধব একটি প্রতিষ্ঠান বলে খ্যাত। তারা বেশ কিছুদিন ধরে তাদের কর্মীদের বেতন ও ভাতা বিতরণ করে মোবাইল ওয়ালেটের মাধ্যমে। প্রান্তিক এই কর্মীদের ব্যাংক জটিলতা নেওয়ার চেয়ে এমএফএস ব্যবহার করা অনেক সুবিধার ব্যাপার। যেহেতু কর্মীরা সব কারখানার আশেপাশেই মেস ও বাসা ভাড়া করে থাকেন, তাই আগে তারা চ্যালেঞ্জটা খুব একটা টের পাননি। কিন্তু এবার কর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটির ভাতা দিতে গিয়ে তারা সমস্যায় পড়লেন। কারণ, এই ছুটিতে কর্মীরা চলে যান যার যার গ্রামের বাড়িতে। সেখানে তো ওই এমএফএসের এজেন্ট নেই। আর এই সময় সমাধান হয়ে এলো নগদ।
যেমন খাগড়াছড়ির মিনি ত্রিপুরার কথা বলা যেতে পারে। মিনি মাত্র ছুটি নিয়েছেন। প্রথম দফা ভাতা চট্টগ্রামের বালুচরায় বসেই পেয়েছেন। কিন্তু পরের দফা ভাতা পাওয়ার আগেই তিনি হয়তো বাড়ি চলে যাবেন। তাই এই নগদ-সুবিধা পেয়ে খুশি তিনি, আর বাড়ির এন্ডে ঐন্য কোম্পানির এজেন্ট এটিএম ন আসিল। টিয়া তুলতো বউত দূর জন ফরিত। এহন সুবিধে ঐইয়ে নগদত ফনে। ঘরের লগের দুয়ানত জাই তুলি ফেলাই। এই চিন্তাটার কথা বলতে গিয়ে ফোর এইচ গ্রুপের একাউন্টস বিভাগের প্রধান মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা যাদের মাধ্যমে নিয়মিত বেতন দিতাম, তাদের তৃনমূল পর্যায়ে খুব একটা এজেন্ট নেই। ফলে নগদের সাথে আমরা কাজটা করছি। এখন পর্যন্ত আমাদের অভিজ্ঞতা খুব ভালো। আশা করছি, এই প্রতিষ্ঠানটির সাথে আমরা আরও কাজ করতে পারব।
ফোর এইচ গ্রুপের সাথে এই সম্পর্ক স্থাপনের কাজটি করেছে নগদ চট্টগ্রাম অফিসের করপোরেট বিভাগ। এই বিভাগের প্রধান রাজীব বিশ্বাস বলেন, নগদের কাজই হলো মানুষের জীবনকে সহজ করে তোলা। সেই উদ্দেশ্য থেকেই আমরা এই কাজটা করেছি। আমরা গত তিন মাসে দেড় কোটি টাকার বেশি মাতৃত্বকালীন ছুটি ভাতা পৌঁছে দিয়েছি গ্রাহকের কাছে। উদ্দেশ্যটা যে সফল, সেটা ফোর এইচ গ্রুপের কর্মীরাই সাক্ষ্য দিচ্ছেন। মুরাদগরের মুক্তা আক্তার যেমন বলছিলেন, আই ছুটিত এহন, মেটার্নিটিত। আর কোম্পানি ডেলিভারির আগে টিয়া দিবো। আরে হইয়ে টিয়া নগদ একাউন্ট এর মইদ্যে দিবু। ভালা অইয়ে, নইলে আর্তুন এই অবস্থাত অফিসত জন ফরিত টিয়া অনিবাল্লাই। লাকি কিছুতেই এই ভালো লাগার কথাটা ভুলতে পারছেন না। চকরিয়া থেকেই হাসি মেশানো কণ্ঠে বলছিলেন, আঁর বাবু হইবো। এই সমত টেনশন ভালা নলাগে! হেতাল্যায় আঁর কোম্পানি নগদ র লৈ মিলি আঁর টেনশন কমায় দিয়ে! ইয়ান এক্কান বিরাট ব্যাপার! এভাবে মানুষের ‘টেনশন’ কমানোই তো মানবসেবা। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।