সাকিব ছাড়া প্রথম টি–টোয়েন্টি দল বাংলাদেশের। গায়ে ছিল নতুন জার্সি। সংগত কারণেই নতুন শুরুর প্রত্যাশা ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দলের কাছে। কিন্তু বেশ কিছু নতুন হলেও ব্যাটে–বলে পারফরম্যান্সটা ঠিক আগের মত পুরানো। দুই টেস্টের সিরিজে নাস্তানাবুদ হয়ে লজ্জার হোয়াইট ওয়াশ হওয়া বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টিতে আরো হতশ্রী। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় তাই হার দিয়ে টি–টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করতে হলো বাংলাদেশকে।
গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে এগিয়ে গেল ভারত। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত। যদিও দলটিতে নেই বিশ্বজয়ী রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাদেজাদের মত ক্রিকেটার। বলা যায়–নতুন এক দল নিয়ে বিশ্ব শাসন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। আর সে দলটির কাছে উড়ে গেল বাংলাদেশ। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন দুইশ/আড়াইশ রান হার হামেসাই হয়। সেখানে ১২৭ রান নিয়ে অন্তত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলকে হারানোর স্বপ্ন দেখাটা বোকামি ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। বাস্তবে তাই হলো। ভারতীয় ব্যাটারদের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছিল আগে ব্যাট করলে ঠিকই দুইশ কিংবা আড়াইশ করে ফেলতো তারা।
টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটটা যে বাংলাদেশ এখনো রপ্ত করতে পারেনি সেটা আরো একবার পরিষ্কার হয়ে গেল। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাটিং এবং বোলিং কীভাবে করতে হয় সেটা যেন দেখিয়ে দিল ভারতীয়রা। কানপুর টেস্টটাকে যেখানে টি–টোয়েন্টি বানিয়ে ছেড়েছিল ভারত সেখানে টি–টোয়েন্টিতো তাদের কাছে ডালভাত। আর সেটাই করে দেখাল সিরিজের প্রথম ম্যাচে।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরু থেকেই হতশ্রী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী করতে থাকে। দুই ওপেনার ফিরে মাত্র ১৪ রানে। প্রথম ওভারেই লিটন দাশ ফিরেন ৪ রান করে। একটি চার মেরেই যেন খেলা শেষ। লিটনকে বিদায় করা আর্শদ্বীপের পরের ওভারে ফিরেন পারভেজ হোসেন ইমন। ৯ বলে ৮ রান করা ইমন ফিরেন বোল্ড হয়ে। অধিনায়ক শান্ত এবং তাওহিদ হৃদয় মিলে ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু সেটাও আলোর মুখ দেখল না। ২৬ রান যোগ করেন দুজন মিলে। টি–টোয়েন্টির সাথে বেমানান ১৮ বলে ১২ রান করে বরুন চক্রবর্তীর বলে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন হৃদয়। পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহ ফিরেন ১ রান করে। ওভার পিছু উইকেট হারাতে থাকা বাংলাদেশ পরের ওভারে হারায় জাকের আলিকে। তিনিও ফিরেছেন এক ডিজিটে। মিরাজের সাথে ১৮ রান যোগ করে ফিরেন অধিনায়ক শান্ত। ২৫ বলে ২৭ রান করার পথে একটি চার এবং একটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। ৭৫ রানে ৬ উইকেট নেই বাংলাদেশের। শতরান পার হতে পারবে কিনা সে শঙ্কা জেগে উঠে। ঠিক তখনই প্রতিরোধ গড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ। রিশাদ হোসেন এবং তাসকিন আহমেদ খানিকটা সঙ্গ দিয়েছে মিরাজকে। আর তাতেই শতরান পার করতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। ৩২ বলে ৩৫ রানের লড়াকু ইনিংস করে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোরার মিরাজ। রিশাদের ৫ বলে ১১ আর তাসকিনের ১৩ বলে ১২ রান বাংলাদেশকে ১২৭ রানে পৌছে দিতে সহায়তা করে। ভারতের পক্ষে আর্শদ্বীপ সিং এবং বরুন চক্রবর্তী ৩টি করে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেন।
জবাবে ব্যাট করতে নামা ভারতের দুই ওপেনার সঞ্জু স্যামসন এবং অভিষেক শর্মা মিলে দুর্দান্ত শুরু করেন। দুই ওভারে ২৫ রান তুলে নিয়ে বিচ্ছিন্ন হন দুজন। অধিনায়ক সুরিয়া কুমার যাদবকে নিয়ে আরো আগ্রাসী স্যামসন। এদুজন ১৮ বলে তুলে নেন ৪০ রান। মোস্তাফিজ এসে ভাঙেন এ জুটি। নিথিশ কুমারকে নিয়ে ম্যাচটা শেষ করে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া্ ৫৯ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে। হার্দিক ১৬ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর নিথিশ অপরাজিত ছিলেন ১৫ বলে ১৬ রান করে।