করোনা মহামারীতে কর্মহীন হয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, জলবায়ু উদ্বাস্তু এবং হতদরিদ্র শ্রেণীর ভাগ্য বদলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দে জোর দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল সোমবার বিশ্বের সর্ববৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের ইকোনমিক রিকভারি প্রজেক্ট নিয়ে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রকল্প অবহিত করণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, করোনা মহামারীতে সারাবিশ্বের মতো চট্টগ্রামের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আবার বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে প্রচুর মানুষ বাসস্থান হারিয়ে চট্টগ্রামে আশ্রয় নিচ্ছে। এসব মানুষদের জীবন মানের উন্নয়ন এখন চট্টগ্রামের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের বাংলাদেশ গড়তে তিনি যে পরিকল্পনা নিয়েছেন তা বাস্তবায়নে চট্টগ্রামের হতদরিদ্র মানুষদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে কাজ করছি। বাংলাদেশে একমাত্র চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনই শিক্ষাখাতে ভর্তুকি দেয়। আমাদের অর্থায়নে ৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি চসিক পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনামূল্যে চিকিৎসা, ওষুধসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সেবা দিচ্ছে। আমি মনে করি চট্টগ্রামের উন্নয়ন করতে হলে আগে চট্টগ্রামবাসীর শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন করতে হবে।
এসময় ব্যাকের পক্ষে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান এবং প্রকল্পের উপ–ব্যবস্থাপক ইয়াসনা রহমান জানান, জলবায়ু ঝুঁকির কারণে নগরীতে স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান, জীবিকা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহায়তা প্রদান এবং কোভিড–১৯ এর প্রভাবে শহরের দরিদ্র জনবসতিতে বসবাসকারী নতুন দরিদ্র জনগোষ্ঠী যারা বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে রয়েছে তাদের একটি স্থিতিশীল আয়ের উৎস খুঁজে বের করার লক্ষে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দুই বছর মেয়াদে ’অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছে ব্র্যাক।
উক্ত প্রকল্পটি অর্থায়ন করছে ক্লাইমেট ব্রিজফান্ড (সিবিএফ) যা কেএফডাব্লুউর মাধ্যমে জার্মান সরকারের সহায়তায় ব্র্যাক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। এই তহবিলটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত বা বাস্তুচ্যুত ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সক্ষমতা জোরদার করার জন্য বাংলাদেশে নিবন্ধিত বেসরকারি সংস্থাগুলোর মাধ্যমে বাস্তবায়িত ছোট আকারের প্রকল্পগুলোকে ফান্ডিং করে থাকে। এছাড়া চট্টগ্রামকে আরো বেশি দরিদ্র বান্ধব এবং পরিকল্পিত সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে কি ধরণেনর উদ্যোগ ও করণীয় গ্রহণ করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা করেন তারা। সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক, আবদুস সালাম মাসুম, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, মোবারক আলী, সাহেদ ইকবাল বাবু, জহুরুল আলম জসিম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।