হট্টগোলের মধ্যেই তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ

| বুধবার , ৩১ মে, ২০২৩ at ৫:২২ পূর্বাহ্ণ

দুই পক্ষের আইনজীবীদের তুমুল হট্টগোলের মধ্যে তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় আরেক সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় হট্টগোলের মধ্যে এক পর্যায়ে বিচারক মো. আছাদুজ্জামানকে এজলাসও ছেড়ে যেতে হয়েছিল। পরে তিনি ফিরলে মতিন অ্যান্ড কোং এর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এ কে আব্দুল মতিনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। এরপর বিচারক বুধবার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন। খবর বিডিনিউজের।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দেড় দশক আগের এই মামলায় এই বছরের এপ্রিলেই বিচার শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত বাদীসহ সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে মোট সাক্ষী ৫৭ জন।

এদিন দুপুর ২টায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পরপরই আদালতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হৈ চৈ শুরু হয়। এসময় বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান। হট্টগোলের একপর্যায়ে বিএনপির আইনজীবীদের ধাওয়া করে এজলাস থেকে বের করে দেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা। এসময় কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিচারক এজলাসে উঠে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন। আদালতে থাকা সহকারী পিপি আজাদ রহমান বলেন, ওরা গণ্ডগোল করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।

মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, মতিন ছাড়া আরও একজন ব্যাংক কর্মকর্তা সাক্ষী হিসাবে কিছু কাগজপত্র আদালতে জমা দিয়েছেন, যা প্রদর্শনী হিসাবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। বিএনপির আইনজীবীদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ওরা মনে হয় মামলার গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিতে চায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক এবং তার স্ত্রী জোবায়দাকে পলাতক দেখিয়ে এই মামলার বিচার চলছে। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তারেক গ্রেপ্তার থাকা অবস্থায় ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক জহিরুল হুদা। তিনি সম্প্রতি আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, তারেক ও জোবায়দার ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। মামলায় জোবায়দার মা ইকবাল মান্দ বানুকেও আসামি করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় আদালতে। পরে উচ্চ আদালত তার বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম বাতিল করে দেয়।

অভিযোগপত্র জমা হওয়ার পর মামলা বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করা হয় জোবায়দার পক্ষেও। তখন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করে হাই কোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাই কোর্টের আদেশ বহাল রাখে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে রায় দেয় হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই আপিলের আবেদন করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখে। এরপর গত ১৩ এপ্রিল তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের লিজ বাতিল, অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধহিজড়াসহ গ্রেপ্তার ৫ চার পথশিশু উদ্ধার