নিজেদের মাঠে হংকংয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেও ৪–৩ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ দল। সে হারটা বড্ড আঘাত হয়ে বিধেঁছিল বাংলাদেশের ফুটবলারদের মনে। তাই ফুটবলাররা পণ করেছিল হংকংয়ের মাঠে গিয়ে শোধ নেবে তারা। ঘরের মাঠে খেলার মাত্র চার দিনের মাথায় হংকংয়ে গিয়ে খেলতে হলো বাংলাদেশকে। এই ম্যাচেও দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ। যদিও জয় নিয়ে ফিরতে পারেনি। তবে হংকংয়ের মাঠে স্বাগতিকদের রুখে দিয়ে ফিরেছে কারবেরার দল।
দুই লাল কার্ডের ম্যাচে বাংলাদেশ ১–১ গোলে ড্র করেছে স্বাগতিক হংকংয়ের সাথে। এটি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ড্র। চার ম্যাচের দুটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ড্র করেছে দুটি। ‘সি’ গ্রুপের টেবিলে ২ পয়েন্ট নিয়ে এ মুহূর্তে তলানিতে আছে বাংলাদেশ। ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে হংকং। প্রায় ৪০ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। খেলার ৭৫ মিনিটে হংকং পরিণত হয় দশ জনের দলে। আর সে সুযোগটাকে বেশ ভালভাবেই কাজে লাগায় বাংলাদেশ।
হংকংয়ের কাই তাক স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল উত্তেজনা। নিজেদের দুর্গ সামাল দিয়ে বারবার আক্রমণে যাওার চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ। রক্ষণের দৃঢ়তা ধরে রাখার ছকেই শুরু করে বাংলাদেশ। তাতে রক্ষণে কয়েক দফা হানা দিলেও মিতুল মারমাকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলতে পারছিল না হংকং। ২২ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ। বল নিয়ে দারুণ ক্ষিপ্রতায় এগিয়ে যাওয়া শোমিতকে পেছন থেকে জার্সি ধরে টেনে ফেলে দেন হংকংয়ের এক ডিফেন্ডার। ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। বঙের একটু উপর থেকে হামজার নেওয়া ফ্রি কিক রক্ষণ দেয়ালে লেগে বাইরে চলে যায়। কিন্তু ৩৬ মিনিটে বিপদ ডেকে আনেন তারিক কাজি। সতীর্থের পাস ধরতে গিয়ে নিজেদের ডি বঙে ফের্নান্দো পেরেইরাকে ফাউল করে বসেন তিনি। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সে সাথে তারিক কাজি দেখের লাল কার্ড। স্পট কিক থেকে গোল করে হংকংকে এগিয়ে নেন ম্যাট অর। ৪৪ মিনিটে আরও বাড়তে পারত বিপদ। মিতুলের গ্লাভস গলে বল পেরিয়ে যাওয়ার পর এক ডিফেন্ডার দ্রুত ক্লিয়ার করেন। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সাদ উদ্দিনের ক্রস বঙের ভেতর থেকে হামজা হেড করে দিতে চেয়েছিলেন শোমিতকে। তবে কানাডা প্রবাসী এই মিডফিল্ডার বলের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার আগেই ক্লিয়ার করেন এনগান চেউক পান। ফলে এক গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যেতে হয় বাংলাদেশকে।
দশ জনের দল নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ৬৪ মিনিটে জায়ান ও সোহেল রানাকে তুলে জামাল ভূঁইয়া ও ফাহামিদুল ইসলামকে নামালে খেলার গতি আরো বাড়ে। মাঠে নামার তিন মিনিট পর ফাহামিদুলের জোরাল শট সরাসরি যায় হংকং গোলরক্ষকের কাছে। খেলার ৭৫ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় হংকং। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার অলিভার গারবিগ। সে সুযোগে আক্রমণের ধার বাড়ায় বাংলাদেশ। আর সফলতাও আসে ৮৩ মিনিটে। বাম দিক থেকে ফাহিমের ক্রসে হেড করেন ফাহামিদুল। বল চলে যায় রাকিবের পায়ে। নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফরোয়ার্ড। খেলায় ফিরে সমতা। তারপরও সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু সে গুলোকে কাজে লাগাতে পারেনি। ফলে আর জয়সূচক গোল না পাওয়ায় প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে পয়েন্ট নিয়ে ফেরার তৃপ্তিটুকুই কেবল সঙ্গী হয় বাংলাদেশের।
এশিয়া কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে। আগামী ১৮ নভেম্বর দেশের মাঠে ভারতের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ দল।