সড়ক ও ফুটপাত ঘিরে অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ

নগরসেবায় ক্যারাভান কর্মসূচি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৮ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের মুরাদপুর থেকে জিইসি মোড় অংশের বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটপাতের উপর দীর্ঘদিন ধরেই ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ও বিভিন্ন মালামাল রেখে পথচারিদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আসছিল একটি মহল। আবার সড়কের উপর অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করায় প্রায় যানজট লেগে থাকে। এসব দুর্ভোগ লাঘবে বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানালেও সুফল মিলেনি। অবশ্য এবার সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ থেকে মুক্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল বিকেলে মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত ‘নগরসেবায় ক্যারাভান’ কর্মসূচি পালন করেন তিনি। এসময় তিনি সড়ক ও ফুটপাতকে ঘিরে অব্যবস্থাপনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিদ্যমান ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি ও মালামাল তাৎক্ষণিক সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেন। এরপর অনেকে সেগুলো সরিয়ে নেন। এরপরও বিষয়টি মনিটরিংয়ের জন্য আজ থেকে ওই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, গতকাল অনুষ্ঠিত ক্যারাভান কর্মসূচিটি ছিল সপ্তম। প্রশাসক নিজে স্কুটি চালিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেন কর্মসূচিতে। এর আগে গত ২৪ আগস্ট কর্মসূচির প্রথম দিন বহদ্দারহাট মোড় আরাকান সড়ক হয়ে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত, ২ সেপ্টেম্বর ফিরিঙ্গিবাজার থেকে নজরুল ইসলাম সড়ক, সদরঘাট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড হয়ে মাঝিরঘাট হয়ে রশিদ বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত, ৯ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালী মোড় থেকে আশরাফ আলী রোড হয়ে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত এবং ১৬ সেপ্টেম্বর আগ্রাবাদ ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর মার্কেট-বেপারীপাড়া হতে শুরু করে বড়পোল-নিমতলা পর্যন্ত, ২৩ সেপ্টেম্বর আন্দরকিল্লা থেকে সিরাজদ্দৌলা রোড, চকবাজার, জামালখান ও চেরাগী পাহাড় হয়ে পুনরায় আন্দরকিল্লা পর্যন্ত এবং ৩০ সেপ্টেম্বর ২নং গেট থেকে বায়েজিদ হয়ে অঙিজেন পর্যন্ত কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এদিকে গতকাল কর্মসূচি চলাকালে ড্রেনে মশা দেখে তাক্ষণিক ওষুধ ছিটান প্রশাসক। এছাড় মশক নিধনে ওষুধ ছিটানো কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
অনুমোদন নেই এমন টেঙি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, অনুমোদনহীন গাড়ি নগরীতে যানজট সৃষ্টি করছে। এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিএমপির প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। কয়েক জায়গায় স্থানীয় লোকজন ক্যাবল নেটওয়ার্ক এর ঝুলে পড়া তারের বিষয়ে অভিযোগ করলে প্রশাসক চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। রাস্তার উভয় পাশের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপানাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে অযাচিত পণ্য সামগ্রী রাখবেন না। দোকানের সামনে সবসময় পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
প্রশাসক অঙিজেন মোড়ে পৌঁছলে সম্মিলিত ছাত্র সমাজের ব্যানারে ধর্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি দেখে তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। তিনি ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য ছাত্রসমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
এর আগে কর্মসূচির শুরুতে সুজন বলেন, ক্যারাভান কর্মসূচি নগরবাসীর হৃদয়ে আশার সঞ্চার করেছে। এ কর্মসূচি নিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় যাচ্ছি। তাৎক্ষণিক সেবা দিচ্ছি। সিটি কর্পোরেশনকে জনগণের আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি। নগরবাসীর প্রতি আমার আহ্বান থাকবে যেখানে সমস্যা বা ভোগান্তি দেখবেন আমাকে জানাবেন আমি সাথে সাথে ব্যবস্থা নেবো।
তিনি বলেন, এ শহর সবার। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য শহর রেখে যেতে চাই। এজন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডব্লিউএইচও স্বীকৃত টিকাই নেবে বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬