সড়ক ও ফুটপাতে দোকানের পণ্য রাখা যাবে না : মেয়র

পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় উচ্ছেদকৃত জায়গায় ফুলের টব স্থাপন কার্যক্রম উদ্বোধন

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২০ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:১২ পূর্বাহ্ণ

নগরের পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের পর পুর্নর্দখল রোধে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এর অংশ হিসেবে উচ্ছেদকৃত জায়গায় ফুলের টব স্থাপন করে সৌন্দর্যবর্ধন করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি সড়ক ও ফুটপাতে দোকানের কোনো পণ্য রেখে ব্যবসা না করার জন্য ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেন।

ডা. শাহাদাত বলেন, হকারদেরকে কখনো স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ আমি করি না। কারণ তাদেরও পরিবার আছে। কিন্তু এখানে যারা, তাদের প্রত্যেকের দোকান আছে। দোকানদাররা দোকানের ভিতরে মাল রাখতে পারে। কিন্তু তারা ফুটপাতও দখল করে ফেলেছে, রাস্তাও দখল করে ফেলেছে। দোকানদারদের দোকানের ভিতরে মাল রাখতে পারে। বেশ কয়েকদিন ধরে এটা অবজার্ভ করছিলাম। আগেও একবার এখানে এসেছিলাম। দেখলাম সমস্ত ফলকাঁঠাল, আম, তাল যতকিছু আছে পুরা রাস্তার অর্ধেকজুড়ে এরা দখল করে থাকে। যার কারণে এখানে যানজট লেগে থাকে। পথচারীদের চলাচল ব্যাহত হয়।

তিনি বলেন, রেলপথে যারা চট্টগ্রামের বাইরে থেকে বিদেশ থেকে এই শহরে আসে তারা এই পথ দিয়ে যায়। এতে চট্টগ্রামের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠে। এই জায়গার সৌন্দর্য রক্ষা করতে হবে। আজ গাছ লাগিয়েছি। এখানে শ্রমিক নেতারা আছেন। সৌন্দর্য রক্ষার বিষয়ে তারাও ঐক্যবদ্ধ।

তিনি বলেন, এখানে কাউকে উচ্ছেদ করছি না। তাদের দোকান আছে। দোকানে তারা মালগুলো রাখবে। ক্রেতারা দোকান থেকে পণ্য নিতে পারবে। আরো যেসব জায়গায় দোকানদাররা রাস্তায় পণ্য রাখে সেগুলো সরানো হবে।

দোকানদারদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, কোনো দোকানদার ফলমূল বা পণ্য ফুটপাতে ডিসপ্লে করতে পারবেন না। সমস্ত পণ্য দোকানের ভেতরেই রাখতে হবে। লোডিং ও আনলোডিংয়ের কাজ রাত ১১টা থেকে সকাল ৯ টার মধ্যে শেষ করতে হবে। এ সময় গাছের টবগুলো দোকানদাররা এক পাশে সরিয়ে রাখবেন, কাজ শেষে আবার সঠিকভাবে বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, মাছুয়া ঝর্ণা এলাকায় মাছের দোকানদাররা সড়কে মাছ রেখে বিক্রিবাটা চালিয়ে আসছেন, তা করা যাবে না। তাদেরও দোকান আছে। অথচ রাস্তায় রেখে মাছ বিক্রি করে। একটা একটা টার্গেট করছি। সব সরানো হবে।

মেয়র বলেন, আমরা পর্যায়ক্রমে প্রতিটি স্পট চিহ্নিত করে ফুটপাত ও রাস্তা দখলমুক্ত করব। ইতোমধ্যে উচ্ছেদকৃত স্থানে গাছ লাগানো শুরু হয়েছে। পুরো শহরকে ধীরে ধীরে সবুজায়নের আওতায় আনা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনেও আমরা ৫০৬০ শতাংশ অগ্রগতি অর্জন করেছি। আগামী বছর নাগরিকরা এর আরও ভালো ফল পাবেন।

মেয়র বলেন, কাতালগঞ্জ ও বিপ্লব উদ্যানের পিছনের স্থানসহ যেসব জায়গায় উন্মুক্তভাবে আবর্জনা পড়ে থাকে সে রকম ১২টি স্থানে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) স্থাপন করা হবে। কাভার দেওয়া এসটিএসের মাধ্যমে শহরকে পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিনন্দন রাখা হবে এবং ওয়েস্ট টু এনার্জি প্ল্যান্ট স্থাপনের লক্ষ্যে জাপান ও কোরিয়ার কোম্পানির সঙ্গে কার্যক্রম দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

মশক নিধন কার্যক্রম প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, প্রতিদিন ফগার মেশিনের মাধ্যমে কেমিক্যাল স্প্রে করা হচ্ছে। তবে একই ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে মশা প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে ফেলে। এ জন্য আমরা নিয়মিত ওষুধ পরিবর্তন করছি। সমপ্রতি শিকাগোর একটি গবেষণা কেন্দ্রের তৈরি নতুন ওষুধ আনা হয়েছে। এটি ইতোমধ্যে কোতোয়ালী, হালিশহর ও বায়েজিদসহ কয়েকটি এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। দ্রুত এটি নগরের সর্বত্র প্রয়োগ করা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন আলী চৌধুরী জয়, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ), জিয়াউর রহমান জিয়া, হকার নেতৃবৃন্দের মধ্যে আব্দুল বাতেন, জসিম মিয়া ও জসিম উদ্দিন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচাকসুর তফসিল কখন, অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা
পরবর্তী নিবন্ধআবারও বেড়েছে কাপ্তাই লেকের পানি, ছাড়া হবে আজ