ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে গত সোমবার নগরীর নিচু এলাকা হাঁটু থেকে কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায়। তবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নির্মিত স্লুইচ গেটের কারণে রক্ষা পায় ভোগ্যপণ্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জ। বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বাড়ার কারণে রাজাখালী খাল এবং চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনার স্লুইচ গেট বন্ধ করে দেয়ায় পানি প্রবেশ করতে পারেনি। এক সময় কেবল জোয়াারের পানির ধাক্কায় রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়াতেও ডুবে যেতো চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের দোকানপাট। এর আগে সর্বশেষ গত ২০২২ সালের অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে ব্যবসায়ীদের ৮০ শতাংশ দোকান–গুদামে পানি প্রবেশ করে। এতে প্রায় ৫শ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েন বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। সেই সময় চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনায় সিডিএর নির্মাণাধীন স্লুইচ গেটের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান। তবে এবার স্লুইচ গেট বন্ধ রাখার ফলে ব্যবসায়ীরা রক্ষা পায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের বৃষ্টিপাতে খাতুনগঞ্জের চান মিয়া গলি, ইলিয়াছ মার্কেট, বাদশা মার্কেট, সোনা মিয়া মার্কেট, আমির মার্কেট, নবী মার্কেট, হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার এলাকায় কোনো ধরনের জলাবদ্ধতা ছিল না। সড়কে সাময়িক পানি জমলেও বৃষ্টি কমার সাথে সাথে পানিও কমে যায়। এছাড়া চাক্তাইয়ের ড্রামপট্টি, চালপট্টি, এজাজ মার্কেট, মধ্যম চাক্তাই, মকবুল সওদাগর রোড, সোবহান সওদাগর রোড এবং আছদগঞ্জের নিচু এলাকায় আগে এক সময় বেশিরভাগ দোকান–গুদামে পানি প্রবেশ করতো। তবে এবার সে চিত্র দেখা যায়নি।
চট্টগ্রাম রাইচ মিলস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্লাহ বলেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চাক্তাই খালকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। চাক্তাই খালের প্বার্শবর্তী হওয়ায় জোয়ারের পানি সহজেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতো। তবে এবার সময় মতো সিডিএ স্লুইচ গেট বন্ধ রাখায় ভারী বৃষ্টিপাতেও ব্যবসায়ীদের দোকান গুদামে পানি প্রবেশ করেনি।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ এক সময় বৃষ্টি ছাড়া শুধুমাত্র জোয়ারের পানিতে ডুবে যেত। তবে এবার রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির মধ্যে আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিরাপদে ছিল।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, স্লুইচ গেট যদি না থাকতো তবে আমাদের কপালে দুঃখ ছিল। গত প্রায় দুই বছরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তবে এবার আমরা সেই সংকট থেকে রক্ষা পেয়েছি।