আর মাত্র দু’দিন পরেই বিয়ের আসরে বসার কথা ছিল আব্দুল মালেকের। হাটহাজারীর নিজ বাড়িতে চলছিল সাজ সাজ রব। দুবাই ফেরত মালেক সদ্য কিনে এনেছিলেন ১৪ লাখ টাকার সোনার গয়না—কনে সাজানোর জন্য। কিন্তু তার আগেই নেমে এলো অন্ধকার।
আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় ঢাকার আরামবাগ থেকে একটি বিলাসবহুল স্লিপার বাসে উঠেছিলেন মালেক। তার পাশে বসেন এক অচেনা যাত্রী, যার আচরণ ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। কথা বলে, হাসিখুশি পরিবেশে সহজেই ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে সে।
বাসের সুপারভাইজার জানান, টিকিট চেকের সময় মনে হয়েছিল তারা পূর্বপরিচিত। কিন্তু তা ছিল কৌশলী অভিনয়।
ঢাকা থেকে কুমিল্লায় পৌঁছে বাস যখন যাত্রা বিরতিতে থামে, তখন সেই অচেনা ব্যক্তি নেমে যায়। কিন্তু নির্ধারিত ৩০ মিনিট পার হয়ে যাওয়ার পরও সে ফিরে না আসায় বাস কর্মীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরও কোনো খোঁজ না পেয়ে পাশের সিটে ঘুমন্ত মালেককে ডাকাডাকি শুরু করেন।
কিন্তু কোনো সাড়া নেই মালেকের। বাস দামপাড়া পৌঁছালে শুরু হয় আরও তীব্র ডাকাডাকি। তবু জ্ঞান ফেরে না মালেকের।
অবশেষে মালেককে বাস থেকে নামিয়ে স্টপেজে নেওয়া হয়। অনেক চেষ্টা করে জ্ঞান ফেরানো হয় তাকে। জ্ঞান ফিরেই তিনি জানান, তার ব্যাগে থাকা ১৪ লাখ টাকার সোনার গহনা খোয়া গেছে।
বাসে বসে বসেই মালেক অজ্ঞান হয়ে পড়েন—সম্ভবত খাবারে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল চেতনানাশক কিছু। অজ্ঞান পার্টির সদস্য সেই সুযোগেই হাতিয়ে নেয় সব। বিয়ের প্রস্তুতির আনন্দের বদলে আজ শোকের ছায়া মালেকের পরিবারে।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানায় পরিবার। সংগ্রহ করা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ। আব্দুল মালেককে নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। আধো গলায় বলতে পারছেন না কিছুই। এখনও কাটেনি তার নেশার ঘোর।