চলে গেলেন স্যামসাং চেয়ারম্যান ই-গন হি। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে স্যামসাং ইলেকট্রনিঙ। রোববার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের সময় ই গন-হি’র পাশে ছিলেন তার সন্তান ও স্যামসাংয়ের ভাইস চেয়ারম্যান লি জে-ইয়ং। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট দ্য ভার্জ জানিয়েছে, মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত কোনো তথ্য এখনো দেয়নি প্রতিষ্ঠান বা তার পরিবার। স্যামসাং ইলেকট্রনিঙকে বর্তমানের অবস্থায় নিয়ে আসতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছেন ই গন-হি। স্বস্তা টিভি ও গৃহস্থালী পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে স্যামসাংকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্র্যান্ডের রূপ দিয়েছিলেন তিনি। স্যামসাংয়ের পাশাপাশি নিজেও গড়ে উঠেছিলেন, খেতাব পেয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ ধনীর। খবর বিডিনিউজের।
উল্লেখ্য, পুরো দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জিডিপির এক পঞ্চমাংশই আসে স্যামসাং ইলেকট্রনিঙ থেকে। ‘নতুন ব্যবস্থাপনার’ সঙ্গে স্যামসাংকে ১৯৯৩ সালে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন ই গন-হি। স্যামসাং জানিয়েছে, তার ওই ব্যবস্থাপনাই বৈশ্বিক সমাজকে এগিয়ে নিতে সেরা প্রযুক্তি সরবরাহের প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যকে উদ্বুদ্ধ করেছে।
আইনি জটিলতার কবলেও পড়েছিলেন সদ্য প্রয়াত এ স্যামসাং চেয়ারম্যান। ১৯৯৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে ঘুষ প্রদানের অভিযোগ এসেছিল তার নামে। আর ২০০৮ সালে তোলা হয়েছিল কর ফাঁকি ও জালিয়াতির অভিযোগ। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি অপরাধ থেকেই ক্ষমা পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় ক্ষমার সময় দক্ষিণ কোরিয়ার বিচার মন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি যাতে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিতে নিজ পদে ফিরতে পারেন এবং ২০১৮ সালে পিয়ংচ্যাংয়ে অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিকের জন্য ভালো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেন, সে লক্ষ্যেই কাজটি করেছেন তারা।
ভার্জ জানিয়েছে, ই গন-হি’র মৃত্যুতে স্যামসাংয়ের ভার নিয়েও কথা উঠবে আবার। হিসেবে অনেক দিন ধরেই ই গন-হি’র সন্তান লি জে-ইয়ং-কে স্যামসাং নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছিল। কিন্তু তিনিও নানাবিধ আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছেন। মাঝখানে দুর্নীতির দায়ে প্রায় এক বছর কারাদণ্ডও ভোগ করেছেন তিনি। দক্ষিণ কোরিয়ার আইন অনুসারে, লি’র সম্পদ বিবেচনায় নিয়ে উত্তরাধিকার কর বাবদ শত শত কোটি ডলার গুণতে হবে তাকে। ফলাফল হিসেবে প্রতিষ্ঠানে নিজ মালিকানা অংশও বাধ্য হয়ে কমিয়ে ফেলতে হতে পারে লি’কে।