স্মৃতিতে প্রিয় আজাদী

শাহীন সাহারীয়া | মঙ্গলবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ

সেই শিশুকালে আজাদীর সাথে প্রথম দেখা হয়। ধীরে ধীরে কথা হয়। পরিচয়টাও হয় তখন, (১৯৮৪-৮৫ সাল)। যখন আজাদী পড়তাম তখনই দেখতাম ‘আগামীদের আসর’ নামের একটি আলাদা পাতা থাকে এখানে যার এক কোনায় একটি কুপন থাকে। যেটা পূরণ করে পাঠালে ‘আগামীদের আসর’ এর সদস্য হওয়া যায়। পড়তে পড়তে একদিন এই কুপনটা পূরণ করি। একটি খামে ভর্তি করে পাঠিয়ে দিই ডাক বক্সে; আর অপেক্ষা করতে থাকি কখন আমার নাম আসবে। প্রিয় আজাদী প্রতিদিনই আসে কিন্তু আমার ‘আগামীদের আসর’ এর সদস্য হওয়ার খবরটা আসে না। অভিমানে মন খারাপ হয। তাহলে কি আমার কুপনটা ঠিকমতো পৌঁছাইনি? অনেকেরই নাম আসে, সদস্য হওয়ার সিরিয়াল নাম্বারটাও আসে আমারটা কেন আসে না? এভাবে দুই সপ্তাহ কেটে যায়। পরের সপ্তাহে দেখি আগামীদের আসর এর পাতায় আমার নাম আসে। সাথে সদস্য নাম্বারটাও। খুশিতে আমি আত্মহারা। পত্রিকার পাতায় আমার নাম দেখা হয় প্রিয় আজাদীতে। এরপর আমি টুকটাক কয়েকটা ছড়া লিখে পাঠাই। এগুলোও ছাপানো হয়। এভাবে আমার প্রতিটা সকাল প্রিয় আজাদীর অপেক্ষাই শুরু হতো। এরপর পড়ালেখার চাপে লেখা পাঠানো হয়নি কিন্তু আজাদী পড়েছি প্রতিদিনই। তখনই পড়তাম রাশেদ রউফ ভাইয়া, আকাশ আহমেদ, গোফরান উদ্দীন টিটুসহ অনেকের লেখা। এরই মধ্যে অনেক কিছুই লিখতাম টুকটাক সবই জমা হচ্ছিল। ভাবতাম, আমিতো লেখার কোন নিয়ম কানুন জানিনা। আমি যে লিখি নিয়মমতো হয় কি? কাকে দেখানো যায়? একদিন আমার এক ক্লাসমেট একটি ছোট বই নিয়ে আসে যেখানে সামনের পাতায় লেখা থাকে। অনুষ্ঠানের অতিথি জনাব রাশেদ রউফ, সহযোগী সম্পাদক দৈনিক আজাদী। সময় করে একদিন সবগুলো জমানো লেখা নিয়ে চলে যাই আজাদী অফিসে রাশেদ ভাইয়াকে দেখাতে। একদিন যখন শৈলীতে গেলাম তখন রাশেদ ভাইয়া একজন অমায়িক ও আন্তরিক একজন শিক্ষক যেন। আমাকে লিখে লিখে শেখাতেন অক্ষরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, একমাত্রা, দ্বিমাত্রা, বদ্ধাক্ষর, যুক্তাক্ষর কি? তখন লিখি প্রিয় আজাদীর সাপ্তাহিক আয়োজন ‘আনন্দন’ এ প্রতি বৃহস্পতিবার ছাপানো হতো আনন্দন। প্রথম লেখাটি ছাপানো হয় ৮ই আগস্ট ৯৬ সালে। মনে পড়ে চট্টগ্রামে ইরানী বাণিজ্য মেলা নামে ফিচারটি প্রথম লেখা ফিচার আমার প্রিয় আজাদীতে। চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্র নিয়েও লিখি তখন, উদ্বোধনের ধীরগতি নিয়ে লেখা এই ফিচারটিতে রাশেদ ভাইয়া তখন এর একটি ছবিও জুড়ে দেন সিটিভির। অধ্যাপক আনোয়ারা আলম ম্যাডামকে নিয়ে লিখি ‘আপন ভুবন’ কলামে। এভাবে আমার প্রতিদিনের রুটিনের সাথে মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে থাকে প্রিয় আজাদীর প্রতিটি পাতা। উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি প্রিয় আজাদী ও আজাদী পরিবারের সকলের, নিরন্ত শুভকামনা প্রিয় আজাদী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজাদী পরিবারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা
পরবর্তী নিবন্ধনারীর নিরাপত্তা বিধান ও প্রাসঙ্গিক বিষয়-আশয়