স্মার্ট সিটিজেন তৈরিতে ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব হয়েছে

চট্টগ্রামে নলেজ পার্কের ভিত্তি স্থাপনে প্রতিমন্ত্রী পলক

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৩ at ৬:১১ পূর্বাহ্ণ

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য দরকার স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট ইকোনমি এবং স্মার্ট গভর্নমেন্ট। এ চারটি স্তম্ভকে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করতে সরকার ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এই উদ্যোগের প্রথম কাজ হচ্ছে স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করা। এ লক্ষ্যে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ক্রিয়েটিভ, ইনোভেটিভ, প্রবলেম সলভার তথা ফিউচার স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে তৈরি করতে ইতিমধ্যে সারা দেশে ১৩ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনার প্রতি জনগণের আস্থা রাখা দরকার।

গতকাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের উদ্যোগে নলেজ পার্ক চট্টগ্রামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চান্দগাঁওয়ে নলেজ পার্কের ভিত্তি স্থাপন করেন।

ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় ৯ দশমিক ৫৫১ একর জায়গায় পার্কটির নির্মাণব্যয় প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা। পার্কটিতে প্রতি বছর ৩ হাজার তরুণতরুণী সরাসরি প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে। পার্কটিতে ১ হাজার তরুণতরুণীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেখানে একটি সিনেপ্লেক্স ও একটি ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্টার্টআপ বিজনেস শুরু করার পাশাপাশি সুস্থ বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল অনুমোদন হওয়া প্রকল্পটি আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের আওতায় পাঁচতলা একটি স্টিল স্ট্রাকচারের ভবনে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা গড়ে তোলা হবে।

আইসিটি সচিব শামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জুনায়েদ আহমদ পলক বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে চুয়েটে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর মাত্র এক বছরেই সেখানে বেশ কিছু আইটি প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টআপকে স্পেস বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে সিঙ্গাপুরব্যাংকক মার্কেটের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পূর্ণ উদ্যমে চলছে।

তিনি বলেন, নতুন করে প্রাইমারিতে ৫ হাজার এবং স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় আরো ১০ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে স্কুল পর্যায়ে ৩০০ ‘স্কুল অব ফিউচার’ স্থাপন করা হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে আরো ১ হাজার স্কুল অব ফিউচার বা স্মার্ট স্কুল স্থাপন করা হবে। সেখানে শিক্ষার্থীরা রোবটিক্স, লোগো, ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নিজেদের তৈরি করতে পারবে।

বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নেই। সরকার এজন্যই একটি প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গড়ে তুলতে কাজ করে চলেছে। এখন থেকে আর চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না। নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকরি দেবে।

সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে আইসিটি বিভাগ থেকে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম ডিজিটাল সিটি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা আইসিটি সেক্টরে ভারতবাংলাদেশ সহযোগিতায় গৃহীত প্রকল্পটির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এটি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রকল্পটি ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের লক্ষ্যকেও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরুল্লাহ, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেহেদী অনুষ্ঠানের ভিডিও করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬