সরকারি–বেসরকারি কোনো সহযোগিতা না পেয়ে কক্সবাজারের রামুতে শিক্ষার্থীরাই স্বেচ্ছাশ্রমে জরাজীর্ণ সড়ক সংস্কার করলো প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক। কেউ মাটি কাটছেন, কেউ ভ্যানে করে মাটি এনে দিচ্ছেন, কেউ ইট বিছাচ্ছেন, কিন্তু তারা কেউ পেশাদার শ্রমিক নন। সবাই ছাত্র–যুবক।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার রাজারকুল মনসুর আলী সিকদার আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের দেখা গেল এমন দৃশ্য। স্থানীয় সামাজিক সংগঠন তরুণ আলো একতা যুব সংঘের ব্যানারে এ মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়। এ সময় স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী ও যুবরা সবাই নীল সাদা টি–শার্ট পরেন।
জানা গেছে, রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের মনসুর আলী সিকদার আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের এ সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। সড়কের বিভিন্ন অংশে বিছানো ইট উঠে যাওয়ায় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়।
সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়। ফলে স্কুল কলেজ মাদ্রাসাগামী শত শত ছাত্র–ছাত্রী এবং এলাকার হাজার হাজার জনসাধারণ এ সড়কে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকালে গঠনটির ৩০ জন সদস্য নিজেদের অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করে। তাদের এমন মহৎ উদ্যোগে সহযোগিতার হাত কিছু কিছু স্থানীয়রাও। তরুণ আলো একতা যুব সংঘের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জহুর আলম জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। কিন্তু সাড়া পাইনি। তাই মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে আমরা নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কারের সিদ্বান্ত নিই। তারা জানান, ২০১৮ সালের ২০ জুন আমরা এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি। এরই মধ্যে সংগঠনটি কঙবাজার জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনও লাভ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা জনহিতকর কাজ আমরা চালিয়ে আসছি। করোনাকালে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও জীবনুনাশক ছিটানো, এলাকায় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করে আসছি। যোগ করেন রাশেদ ও জহুর। রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাশেকুর রহমান জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত ছাত্র–ছাত্রীসহ এলাকার জনসাধারণ চলাচল করে। সড়কটির সংস্কারের জন্য ইতিপূর্বে রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদে একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। অবশেষে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দূর করতে তরুণ আলো একতা যুব সংঘের সদস্যরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ শুরু করেছে। এটি অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং অনুকরণীয় উদ্যাগে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা আজাদীকে বলেন, এটি অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক। এভাবেই সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।