স্বাস্থ্য খাতে পোস্টিং অটোমেশনের আওতায়, দুর্নীতি হবে না

লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালের কাজের প্রশংসায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেছেন, লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালের এত কাজ দেখে আমার সত্যিই ভালো লাগছে। এখানে ধনীগরিব সবাই আস্থা নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে আপনারা এখানে যন্ত্রপাতির সংকটের কথা বলেছেন। আসলে সময়ের সাথে যন্ত্রপাতিরও আধুনিকায়ন হয়ে যায়। আজকে যেটি সবচেয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, হয়তো আগামী দিনে সেটি ব্যাকডেটেড হয়ে যাবে।

গতকাল শনিবার সকালে নগরীর জাকির হোসেন রোডে লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম দুর্নীতির বদনাম আছে। আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর অনেক ডাক্তারনার্সকে প্রমোশন দিয়েছি, পোস্টিং দিয়েছি। এতে কোনো ধরনের দুর্নীতি বা টাকা লেনদেনের কথা শুনেছেন? শোনেননি। কারণ পোস্টিংটা আমরা অটোমেশনের আওতায় নিয়ে এসেছি। অনেক ডাক্তারকে আমরা প্রমোশন দিয়েছি। সবার পোস্টিং অটোমেশনে হবে। সবার থেকে চয়েস নেয়া হবে, সেই মতে পোস্টিং হবে। এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম হবে না।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর আততায়ীর হামলার বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের হামলা কখনো মেনে নেয়া যায় না। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। তবে আমরা তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতে যা যা করার সব করে যাব। তাকে বিদেশে নেয়ার প্রয়োজন হলে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সেটিও করা হবে।

চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের (সিএলএফ) ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক জেলা গভর্নর লায়ন নাসির উদ্দিন চৌধুরী লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালের নানা সেবামূলক কর্মকাণ্ডের বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কানাডিয়ান দাতা সংস্থা জেকো ফাউন্ডেশন চট্টগ্রাম লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালের তত্ত্বাবধানে বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামীণ, দুর্গম পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের অসহায়, দুস্থ ও অসচ্ছল ছানিপড়া রোগীদের লেন্স প্রতিস্থাপন করে দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে ধারাবাহিকভাবে আর্থিক অনুদান প্রদান করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত জেকো ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় তিন ধাপে প্রত্যন্ত গ্রামীণ, দুর্গম পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চল থেকে হাসপাতালে এনে হাজারের বেশি ছানিপড়া রোগীকে অপারেশনের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি পুনরুদ্ধার করে সমাজে পুনর্বাসিত করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা দরিদ্র রোগীদের প্রথমে স্ক্রিনিং করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসি। পরে চিকিৎসা শেষে তাদের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিই। একইসাথে আমাদের ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে এখন চক্ষু বিশেষজ্ঞও তৈরি হচ্ছে। মাননীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যদি আমাদের দিকে একটু সুদৃষ্টি দেন, তবে আমাদের কাজ আরো বেশি গতি পাবে। আমাদের এখানে প্রতিটি কাজ স্বচ্ছতার সাথে হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের (সিএলএফ) ব্যবস্থাপনা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক জেলা গভর্নর লায়ন কামরুন মালেক, সাবেক জেলা গভর্নর লায়ন ডা. শ্রীপ্রকাশ বিশ্বাস, লায়ন সিরাজুল হক আনসারি, লায়ন্স ক্লাব্‌স ইন্টারন্যাশনাল জেলা ৩১৫বি৪ এর প্রথম ভাইস জেলা গভর্নর লায়ন মো. কামরুজ্জামান লিটন, সেক্রেটারি লায়ন ডা. দেবাশীষ দত্ত, ট্রেজারার লায়ন এস জোহা চৌধুরী, এসোসিয়েট সেক্রেটারি লায়ন এস এম আশরাফুল আলম আরজু, লায়ন পারভীন মাহমুদ, লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল কবীর, লায়ন জাহানারা বেগমসহ সিনিয়র লায়ন নেতৃবৃন্দ।

এছাড়া হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, একাডেমিক ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. প্রকাশ কুমার চৌধুরী, উপপরিচালক ডা. শাবানা সুলতানা, সহকারী পরিচালক ইনসাফি হান্নাসহ হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চট্টগ্রাম কিডনি ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলোহাগাড়ায় অর্ধলাখ টাকা জরিমানা গুণলেন ধানের শীষের প্রার্থী
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে সন্ত্রাসী হামলায় বিএনপির ৪ নেতাকর্মী আহত