স্বামী হত্যার বিচার চাইলেন গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ নাদিমের স্ত্রী নিহা

| মঙ্গলবার , ৪ নভেম্বর, ২০২৫ at ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ

আমার স্বামীর হত্যার জন্য শেখ হাসিনা এবং যে পুলিশরা গুলি করেছে তারা দায়ী। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।’ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মো. নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নিহা গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাক্ষ্যে এই জবানবন্দি দেন।

ট্রাইব্যুনাল১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ তার জবানবন্দি রেকর্ড করে। জুলাই গণ অভ্যুত্থানে রাজধানীর রামপুরায় ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে গুলি করাসহ দুজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন তিনি। খবর বাসসের।

সাক্ষীর ডায়াসে ওঠেন শহীদ নাদিম মিজানের স্ত্রী। তার সঙ্গে তিন বছরের ছেলে আনাস বিন নাদিম। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই স্বামী হত্যার পুরো বর্ণনা তুলে ধরেন নিহা। একইসঙ্গে বিচার চেয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, আমার নাম তাবাসসুম আক্তার নিহা। আমি একজন গৃহিণী। আমার স্বামী শহীদ নাদিম মিজান তিনি রামপুরা বনশ্রী এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা করতেন আমার দুই ছেলে। বড় ছেলের নাম আনাস, বয়স চার বছর তিন মাস। ছোট ছেলের নাম মো. আহনাফ, বয়স তিন বছর। ১৯ জুলাই ২০২৪ শুক্রবার আমার স্বামী জুম্মার নামাজ পড়তে রামপুরা থানার সামনের মসজিদে যায়। ঐ দিন আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আমার স্বামীকে বাসায় নিয়ে আসে। আমি দেখতে পাই আমার স্বামীর পেট থেকে রক্ত ঝরছিল। আমি আমার স্বামীর এই অবস্থা দেখে অজ্ঞান হয়ে যাই। আনুমানিক ৫/১০ মিনিট পরে জ্ঞান ফিরলে আমি জানতে পারি আমার স্বামীকে স্থানীয় অ্যাডভান্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাইরে তখন অনবরত গুলি হচ্ছিল, তাই আমি হাসপাতালে যেতে পারি নাই। আমার স্বামীকে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এই কথাটি আমি যারা হাসপাতালে নিয়ে গেছে তাদের কাছ থেকে শুনেছি। পরে আমি জানতে পারি নামাজ শেষে আমার স্বামী মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর থানার সামনে পুলিশ এবং বিজিবির ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়। তিনি আরও বলেন, রাত আনুমানিক ১০টার দিকে এ্যাম্বুলেন্সে করে আমার স্বামীর লাশ তার বাড়ির পাশে মিরপুর ১ নং ঈদগাহ মাঠে নেওয়া হয়। আনুমানিক রাত ১১টার দিকে তার জানাজা হয়। জানাজা শেষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। আমার স্বামীকে হত্যার জন্য শেখ হাসিনা এবং যে পুলিশরা গুলি করেছে তারা দায়ী। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই। এছাড়াও মো. ইয়াকুব নামে একজন আজ সাক্ষ্য দেন। সাক্ষীদের জেরা করেন পলাতক তিন আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন ও গ্রেফতার চঞ্চল চন্দ্র সরকারের আইনজীবী সারওয়ার জাহান। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সাইমুম রেজা তালুকদারসহ অন্যরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকলাউজান নাথপাড়ায় লোকনাথ ব্রহ্মচারী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
পরবর্তী নিবন্ধমাইজভাণ্ডারী যুব ফোরামের আর রহমান ইংলিশ অলিম্পিয়াড