হামাস জিম্মিদের নাম সময়মতো দেয়নি এই অজুহাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যে পৌনে তিন ঘণ্টা দেরি হয়েছিল সেসময়ও ইসরায়েলি বিমানের হামলা থেমে ছিল না। সর্বশেষ এ হামলা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে গাজার আল–কিদরা পরিবারের তিন সদস্যের, যারা যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে মনে করে নিশ্চিন্তে বাড়ির পথে রওনা হয়েছিল।
সোয়া এক বছরের দুঃসহ অভিজ্ঞতা ভুলে নতুন শুরুর প্রত্যয়ে সেই যাত্রাই হলো কাল; তাদের হারিয়ে এখন পরিবারের অন্য সদস্যরাও দিশেহারা। খবর বিডিনিউজের।
চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েল আর হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা ছিল গত রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায়। সে অনুযায়ীই প্রস্তুত হয়েছিল আল–কিদরা পরিবার। তারা ১৫ মাসের ইসরায়েলি হামলা সয়েছে, একাধিকবার বাড়ি ছাড়া হয়েছে, থেকেছে তাঁবুতেও। এ দফার যুদ্ধে যে প্রায় ৪৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে তাদের আত্মীয় স্বজনরাও আছে। আল–কিদরারা বোধহয় এই যাত্রায় বেঁচে যাচ্ছে, এমনটাই ভেবেছিল তারা। চেয়েছিল যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরতে।
রোববার সকাল সকাল ৭ সন্তানকে গাধাচালিত গাড়িতে তুলে খান ইউনিসের পূর্ব অংশের দিকে রওনা হয়েছিলেন আহমেদ আল–কিদরা। তার হিসাব অনুযায়ী সেসময়টা ছিল ভ্রমণের জন্য নিরাপদ, বোমাবাজি তো আর হবে না! কিন্তু পরিবারটি জানতো না ইসরায়েল আর হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে দেরি হচ্ছে। আর এই সুযোগে ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো আগের মতোই গাজার আকাশ দাপিয়ে বেড়ায়, হরেদরে ফেলেছে বোমা। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন হানান। তাকে এখন স্বামী আর দুই সন্তানকে ছাড়াই জীবনের কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। ইসরায়েলের ওই শেষবেলার হামলা মুহূর্তেই এ পরিবারের আনন্দকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছিল। অথচ আগের রাতেই যুদ্ধের অবসান উদ্যাপন করেছিল তারা।