টিকটকের সূত্রে সাখাওয়াত–রীনার প্রেম। তবে সাখাওয়াত সংসারের প্রতি সিরিয়াস ছিল না। আবেগের বশে বিয়ে করলেও স্ত্রী কিংবা সংসারের প্রতি দায়িত্ববোধ তার তৈরি হয়নি। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। ঘটনার দিন ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে গলা টিপে খুন করে সাখাওয়াত। নগরীর বন্দর থানা এলাকায় স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে তাকে গত শুক্রবার নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা কালিকাবর থেকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানতে পারে র্যাব–৭, চট্টগ্রাম।
গ্রেপ্তার সাখাওয়াত হোসেনের (২২) বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। স্ত্রীকে নিয়ে নগরীর বন্দর থানার কলসী দীঘি সড়কে হাজী মাহমুদ মিয়া কলোনির তৃতীয় তলার ১২ নম্বর কক্ষে থাকতেন। গত ২৫ এপ্রিল দুপুরে ওই বাসা থেকে সাখাওয়াতের স্ত্রী রীনা আক্তারের (২৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রীনার বাবার বাড়ি আনোয়ারা উপজেলায়। এ ঘটনায় তার বাবা সাখাওয়াতকে আসামি করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
র্যাব জানিয়েছে, লাশ উদ্ধারের আগের দিন ২৪ এপ্রিল দুপুরে সাখাওয়াত ফোন করে রীনার পরিবারের এক সদস্যকে জানান, রীনা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে রীনার পরিবার তা বিশ্বাস করেনি। কারণ, সেদিন রীনা তার স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। তারা না যাওয়ায় পরদিন রীনার পরিবারের সদস্যরা মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু উভয়ের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগের পর তারা জানতে পারেন, বাসাটি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। তখন পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তালা ভেঙে বিছানার ওপর চাদর দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় রীনার লাশ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার সাখাওয়াতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব–৭ এর সদর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানান, রীনা আক্তার কর্ণফুলী ইপিজেডে একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। পরিবারকে না জানিয়ে ছয় মাস আগে রীনা তার প্রেমিক সাখাওয়াতকে বিয়ে করেন। ঈদ উপলক্ষে সাখাওয়াত ময়মনসিংহে তাদের গ্রামের বাড়িতে রীনাকে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডের দিন অর্থাৎ ২৪ এপ্রিল সকালে তারা চট্টগ্রামে ফেরেন। বাসায় ফেরার পর ঝগড়ার জেরে সাখাওয়াত শ্বাসরোধ করে রীনাকে খুন করেন। পরে লাশ চাদর দিয়ে মুড়িয়ে বিছানায় রেখে পালিয়ে যান।
র্যাব কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, তাদের বিয়েটা ছিল অসম। রীনা সাখাওয়াতের চেয়ে ৫–৬ বছরের বড় ছিল। সাখাওয়াত টিকটক করত। টিকটকের সূত্রে রীনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সাখাওয়াতের। কিন্তু সংসার করতে গিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে মতের অমিল হলে স্বামীর হাতে খুন হন রীনা।