৭৫ বছর আগে এই উপমহাদেশ বিভক্ত হয় ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি রাষ্ট্রে। আজন্ম চক্রান্ত, চরম সাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্রহীনতা ও প্রায় পুরোটা সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেনা শাসিত বর্তমানে প্রায় বিপন্ন পাকিস্তান নিয়ে লেখা আমাদের দেশের প্রেক্ষিতেও জরুরী মনে করেছি। ১৯৭১ সালে ৭ মার্চ রেসকোর্সের বিশাল জনসভায় পাকিস্তান আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু স্বয়ং তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে পাকিস্তানের প্রথম ২৩ বছরের ইতিহাস তুলে ধরে যথার্থভাবে বলেছিলেন যে, ২৩ বছরের করুণ ইতিহাস মানুষের উপর নির্মম অত্যাচারের ইতিহাস, বুভুক্ষু নরনারীর আর্তনাদের ইতিহাস, বাঙালির রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করার ইতিহাস। পরবর্তী ৫২ বছরেও পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টায়নি। ফলে পাকিস্তান রাজনীতি ও আর্থ সামাজিকভাবে আরো বিপন্ন হয়ে পড়েছে। প্রাসঙ্গিকভাবেই পাকিস্তান তৈরির প্রেক্ষিত ও পটভূমির কথা আলোচনা করতে হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশভাগ বিশেষ করে বাংলা ভাগ নিয়ে এক ভিন্নধর্মী ইতিহাস চর্চা শুরু হয়েছে যেখানে ইতিহাসের বৃহত্তর প্রেক্ষিতের যৌক্তিক বিশ্লেষণের চাইতেও খন্ডিত, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার উল্লেখ ও তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়। বিজেপি নেতা যশবন্ত সিং ও জয়া চ্যাটার্জির বই দুটো এক্ষেত্রে উল্লেখ করা যায়। এ দুটো বইতে দেশভাগের জন্য বৃটিশ বিশেষ করে বড়লাট ওয়াভেলের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে জিন্নাহর অযৌক্তিক ও উদ্দেশ্যমূলক দাবী ও কুযুক্তিকে দায়ী না করে কংগ্রেস ও নেহেরু প্যাটেলকে দায়ী করা হচ্ছে কিন্তু পরিকল্পিতভাবে জিন্নাহর ১৬ আগস্টের প্রত্যক্ষ কর্মসূচি গ্রহণ ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতের মাধ্যমে দেশভাগের কৌশলকে ন্যায্যতা প্রদানের অপচেষ্টা এতে লক্ষ্য করা যায়। এ কথা সত্য বটে জিন্নাহ ছিলেন সেকুলার ভাবাদর্শে বিশ্বাসী কিন্তু সর্বভারতীয় রাজনীতিতে নিজের গুরুত্ব প্রতিপন্ন করতে একটি সম্প্রদায়কে রক্ষার নামে সাম্প্রদায়িকতা ও ভন্ডামির আশ্রয় নিয়ে নিজ বিশ্বাসের বিপরীতে চলেছেন। গান্ধী- নেহেরু নিজ নিজ বিশ্বাসের প্রতি ছিলেন আজীবন অনুগত। মর্ডানিটি ও প্রিটেনশন তো এক সাথে চলে না, এটা মেকিয়াভেলিয়ান পশ্চিমা আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য।
উদ্দেশ্য সাধনের জন্য জিন্নাহ কোনদিন নীতি নৈতিকতার ধার ধারেননি। কংগ্রেস নেতৃত্ব কোন অবস্থাতেই জিন্নার মুসলিম লীগকে তাঁর দাবী অনুযায়ী ভারতীয় মুসলমানদের একমাত্র প্রতিনিধি মানতে রাজি হয়নি। এটাই ছিল কংগ্রেস ও জিন্নাহর প্রধানতম দ্বন্দ্ব। বস্তুত খান আবদুল গাফফার খান, কংগ্রেস সভাপতি মওলানা আবুল কালাম আজাদের মতো প্রথম সারির নেতাসহ সারা ভারতের লক্ষ লক্ষ মুসলিম ছিল তখন কংগ্রেসের নেতা ও কর্মী। তাছাড়া কংগ্রেস লড়ছিল ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য, বিশেষ কোন সম্প্রদায়ের সুবিধার জন্য নয়। জিন্নাহর অনৈতিক দাবী ছিল বৃটিশদের divide and rule নীতির নবতর সংস্করণ। পাকিস্তান দাবিই ছিল কৃত্রিম, অবাস্তব ও বৃটিশদের উস্কানি। কেননা এটা জিন্নাহও জানতেন যে, দেশভাগ করে শুধু একটি সম্প্রদায়ের জন্য একটি দেশ গঠন ছিল অবাস্তবায়নযোগ্য একটি প্রস্তাব। একদিকে বিভক্ত ভারতে থেকে যায় কোটি কোটি মুসলিম ও পাকিস্তানে কোটি কোটি হিন্দু। এজন্যই ১৯৪৭ পরবর্তী উপমহাদেশে এত সংঘাত, রক্তপাত ও উদ্বাস্তুর স্রোত বয়ে যায়, যা এখনো অব্যাহত। জিন্নাহ ছিলেন অসম্ভব জেদী, স্বৈর-মনোভাবাপন্ন, ক্ষমতাপ্রিয় একজন রাজনৈতিক নেতা।
বাংলার কয়েকজন মুসলিম জমিদার ছাড়া অধিকাংশ জমিদার ছিলেন হিন্দু ফলে দরিদ্র মুসলিম প্রজাদের সাম্প্রদায়িকভাবে সংগঠিত করা সহজ ছিল। কিন্তু সর্বভারতীয় ভিত্তিতে বিশেষ করে পাঞ্জাব, সিন্ধু, যুক্তপ্রদেশে ছিল বড় বড় মুসলিম জমিদার ও জোতদার। মুসলিম লীগ মূলতঃ এসব অবাঙালী জোতদার ও ভূস্বামীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। জিন্নাহ ছিলেন তাদের প্রতিনিধি। মুসলিম লীগে তাঁর মতের বিরোধী দৃঢ় কোন নেতার অনুপস্থিতিতে তিনি সহজেই মুসলিম লীগের একক ক্যারিশমেটিক নেতায় পরিণত হন। অধিকন্তু কংগ্রেসের ভুল রাজনৈতিক কৌশল ও অপরিণামদর্শিতাকে পুঁজি করে চতুর খেলোয়াড়ের মত সারা ভারতের মধ্যে শক্তিশালী বাংলার মুসলিম লীগকে তিনি নিজ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। জিন্নাহ কোনদিন এক ঘন্টার জন্য জেলে যাননি এবং এক দিনের জন্যও বৃটিশ বিরোধী কোন রাজনৈতিক আন্দোলনে মাঠে নামেনি বরং বৃটিশদের নাজেহাল করে দেয়া ১৯৪২ সালের কংগ্রেসের বিখ্যাত ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের সময় নিশ্চুপ জিন্নাহ বৃটিশ সরকারের প্রিয় পাত্রে পরিণত হন। তখনই বৃটিশ শাসকরা পাকিস্তান দাবী মেনে নিয়ে ‘অবাধ্য’ কংগ্রেসকে শিক্ষা দেয়ার গোপন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, যা তাদের পরবর্তী কর্মকান্ডে স্পষ্ট হয়।
১৯৪৬ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগ বাংলা ছাড়া সমস্ত ভারতের অন্য কোথাও এমনকি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাঞ্জাব, সিন্ধু- সীমান্ত প্রদেশে সরকার গঠন করতে পারেনি অথচ ১৯৪৬ সালে নির্বাচিত গণপরিষদ ও অন্তর্বর্তী সরকার গঠন থেকে শুরু করে দেশভাগ ও দুই অংশের ডোমিনিয়ন ষ্ট্যাটাস নির্ধারণে পরাজিত জিন্নাহ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন ওয়াভেলের কাছে। সেই জটিল সময়ে দেশভাগকে অনিবার্য করে তুলতে এক প্রচন্ড সাম্প্রদায়িক সংঘাত, ঘৃণা, রক্তপাত উত্তেজনা ও পারস্পরিক অবিশ্বাস তৈরিতে মুসলিম লীগ ওয়াভেলের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিঁতে ও সরকারী নিস্ক্রিয়তার আশ্বাসে ১৯৪৬ সালের ১৬ আগষ্ট পাকিস্তানের দাবীতে বৃটিশ নয় কংগ্রেস ও হিন্দু বিরোধী direct action day পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। সেদিন বাংলার সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ সরকার জিন্নার ইঙ্গিতে পরিকল্পিতভাবে The Great Calcutta Killing সংঘটিত করার সুযোগ করে দেন। তিনদিনের প্রচন্ড সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে কয়েক হাজার হিন্দু মুসলমানের রক্তে কলকাতার রাজপথ রঞ্জিত হয়। বাংলার ইংরেজ গভর্নর ব্যারোজ বা প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী এ হত্যাকান্ড বন্ধ করতে যথাসময়ে রাস্তায় নামলেন না। এরই ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় নোয়াখালী ও বিহারে। এই ষড়যন্ত্র ও রক্তাক্ত প্রেক্ষাপটে দেশ ভাগ ও জিন্নার পাকিস্তান অর্জনের পথ দৃশ্যত সহজ হয়ে যায়।
দেশ ভাগ করে পশ্চিম ভারতের সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও সীমান্ত প্রদেশ এবং পাঞ্জাবের ৬২ শতাংশ ভূভাগ ও প্রায় দুই হাজার মাইল দূরত্বে কলকাতা ছাড়াই বাংলার ৬৪ শতাংশ ভূভাগ নিয়ে জিন্নাহর ভাষায় truncated ও moth eaten পাকিস্তান তৈরি হয় কৃত্রিমভাবে। একথাগুলো বলতে হল এ কারণে যে, ৪৭ পরবর্তী সময়ে জিন্না সহ দেশটির নেতৃত্বের চক্রান্ত ও অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড, ’৭১ এর ভাঙন ও ব্যর্থতার ইতিহাস বুঝার জন্য। বাংলার মুসলিম লীগের জনপ্রিয় নেতাদের বিশেষত সোহরাওয়ার্দী ফজলুল হক ও তরুণ মুজিবের সর্বাত্মক সহযোগিতায় পাকিস্তান হাসিলের পরপরই সোহরাওয়ার্দী ও ফজলুল হককে বাদ দিয়ে জিন্না তাঁর অনুগত ও বিশ্বস্ত ঢাকার নবাব পরিবারের খাজা নাজিমউদ্দিনকে ক্ষমতার বৃত্তে টেনে নেন। এর পর জিন্নাহ মাত্র কয়েক মাস বেঁচে ছিলেন। তখন পাকিস্তানের ক্ষমতা চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানের বিশাল পাঞ্জাবী ভূস্বামী ও ভারত থেকে আগত ধনী মুসলিম পরিবার ও সদ্য গঠিত সামরিক বাহিনীর মিলিত চক্রের হাতে। শুরু হয় পাকিস্তানের অগস্ত্য যাত্রা। জেনারেল আইয়ুব খান নিযুক্ত হন পাকিস্তানের সেনাধ্যক্ষ। সমসাময়িক উত্তেজনাকর আন্তর্জাতিক রাজনীতি তথা ঠান্ডা যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একান্ত আস্থাভাজন হিসেবে পাকিস্তান যোগ দেয় সিয়াটো ও সেন্টো নামক মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধ জোটে। মুসলিম লীগের বিক্ষুব্ধ বাঙ্গালি নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত না হওয়া অবধি বাংলায় ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের প্রতিদ্বন্ধী রাজনৈতিক শক্তি ছিল ’৪৭ এর আগে থেকেই কমিউনিস্ট পার্টি। পাঠানদের মধ্যে সীমান্ত গান্ধী খ্যাত খান আবদুল গাফফার খানের জনপ্রিয়তা ছিল সবসসময় জিন্নার শিরঃ পীড়ার কারণ।
একইদিনে স্বাধীন হওয়া পার্শ্ববর্তী ভারত ১৯৪৯ সালে সংবিধান রচনা করে তার ভিত্তিতে ১৯৫২ সালে প্রথম সর্বজনীন ভোটে সাধারণ নির্বাচন করে সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হয়, পক্ষান্তরে পাকিস্তানে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতার ২৩ বছর পরে ১৯৭০ সালে। পাকিস্তান জিন্নার হাত ধরে যে চক্রান্তের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছিল সেই চক্রান্তের ফলে তাঁর নিঃসঙ্গ মৃত্যু পরবর্তী সময়ে আমলা ও বৃহৎ ধনী রক্ষণশীলদের পুতুল গর্ভনর জেনারেল হিসাবে ক্ষমতায় আসেন খাজা নাজিম উদ্দিনের মত অনভিজ্ঞ, জনবিচ্ছিন্ন ঢাকার নবাব পরিবারের একজন লোক। বিরোধীদের উদ্দেশ্যে সেই ১৯৪৮ সালে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলীর কুখ্যাত উক্তি “শির কুচল দেঙ্গে” পাকিস্তানের স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনীতির স্বরূপকে তুলে ধরে। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের চক্রান্তের রাজনীতিতে প্রধান ভূমিকা নেয়। ধীরে ধীরে সামরিক বাহিনী এ অগণতান্ত্রিক ও ষড়যন্ত্রমূলক পরিস্থিতিতে হয়ে উঠে রাজনৈতিক ক্ষমতার কুশীলব।
প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর রওয়ালপিন্ডিতে বক্তৃতারত অবস্থায় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। গণ পরিষদ ১৯৫৬ সালে একটি সংবিধান রচনা করলেও সেনাবাহিনী ও মার্কিন চক্রান্তে রাজনৈতিক দলগুলো কোন স্থিতিশীল বেসামরিক সরকার পাকিস্তানে গঠিত হয়নি। ১৯৫৮ সালে ২৭ অক্টোবর সেনা প্রধান জেনারেল আইয়ুব খান ক্ষমতা দখল করে নিজেকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে। সেই থেকে ভুট্টোর ৫ বছরের শাসন বাদ দিলে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত প্রায় টানা ৩০ বছর সেনাবাহিনী দেশ শাসন করে। ১৯৭০ সালে বিজয়ী দলের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বদলে পশ্চিম পাকিস্তানি ভূস্বামী ও একচেটিয়া ধনিকগোষ্ঠীর সম্মতিতে সেনাবাহিনী নিজের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব বজায় রাখতে বাঙ্গালীদের উপর নজিরবিহীন গণহত্যা চালায় এবং এতে পাকিস্তান ভেঙ্গে যায়। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বেনজির ভুট্টো ও নেওয়াজ শরীফের দুই দলের মধ্যে ক্ষমতার মসনদ নিয়ে ‘চেয়ার সিটিং’ খেলা চলে সামরিক বাহিনীর ইঙ্গিতে ও প্রভাবে। অবশেষে ১৯৯৯ সালে নেওয়াজ শরীফকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করে সেনা প্রধান জেনারেল পারভেজ মোশারফ আবারো ক্ষমতা দখল করে প্রায় ১০ বছর পাকিস্তান শাসন করে। সেই সময়ে ক্ষমতার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী বেনজির ভুট্টোকে সেনাবাহিনীর ইঙ্গিতে ২০০১ সালের ডিসেম্বরে এক জনসভায় গুলি করে হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় আসলেও সেনাবাহিনী ‘কিং মেকারের’ ভূমিকা অব্যাহত রাখে। সেনা বাহিনীর আশ্রয়ে এবং প্রশয়ে দল গঠন করে সশস্ত্র জঙ্গীদের প্রতি নমনীয় ইমরান খান ‘নির্বাচিত’ হয়ে ক্ষমতায় আসার পরেই আমেরিকা ও সেনাবাহিনীর বিরাগ ভাজন হয়ে সম্প্রতি ক্ষমতার বাইরে চলে গেছেন। দীর্ঘ এই গণতন্ত্রহীন টালমাটাল পরিস্থিতিতে ধর্মান্ধ রাজনীতি ও হিংসা প্রবল হয়ে উঠে আজ রাষ্ট্রকে গ্রাস করতে উদ্যত।
স্বাধীনতার ৭৫ বছরে জিন্নাহর পাকিস্তান আজ শিয়া-সুন্নী বিরোধ, জঙ্গীবাদ, মার্কিন চক্রান্ত, অব্যাহত সেনা শাসন, চরম আর্থিক বৈষম্য ও লুন্ঠন, গণতন্ত্র হীনতার রুদ্ধ পরিবেশে বিধ্বস্ত ও দিশাহীন। পারমাণবিক শক্তিধর এ রাষ্ট্র আজ দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, সম্প্রীতি ও প্রগতির বড় প্রতিবন্ধক হয়ে উঠেছে। সেই পাকিস্তানের কবল থেকে চরম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের দেশকে ১৯৭৫ সালের পর থেকে সামরিক শাসকরা সেই পরিত্যক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রাদর্শে চালাতে শুরু করে। দুঃখজনকভাবে সেপথেই এখনো চলেছি আমরা। সে আলোচনা বারান্তরে করা যাবে।
লেখক : কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক