স্বর্ণ-ইয়াবা পাচারের নিত্য নতুন কৌশল

এবার ব্যাগে ইয়াবার তার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ৪:০৬ পূর্বাহ্ণ

সাধারণ কোন মানুষের পক্ষে বুঝার উপায় নেই যে, ব্যাগের ভেতরে স্বর্ণ কিংবা ইয়াবা রয়েছে। কৌশলটি এত অভিনব যে খোদ কাস্টমস গোয়েন্দা এবং পুলিশ অফিসারদেরও বেগ পেতে হয়েছে ব্যাগ রহস্য ভেদ করে স্বর্ণ ও ইয়াবা খুঁজে পেতে। চট্টগ্রাম হয়ে বিশেষ এই কায়দায় চোরাচালানিদের নয়া তৎপরতা চলছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।

দিনকয়েক আগে হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালানের অভিনব এক কৌশলের রহস্য উদঘাটন করে বিমানবন্দর এনএসআই টিম এবং কাস্টমস কর্মকর্তারা। ওটি ছিল স্বর্ণ চোরাচালান। কিন্তু মাত্র দিন কয়েকের মাথায় একই স্টাইলে ইয়াবা পাচারের এক ঘটনা উদঘাটন করেছে পুলিশ। ব্যাগের একেবারে তলায় ভাঁজ না পরার জন্য দেয়া মোটা তারের আদলে স্বর্ণের তার বানিয়ে আনা হয়েছিল বিমানবন্দরে। এবার ইয়াবার তার বানিয়ে পাচার করা হচ্ছিল ঢাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, টেকনাফের হ্নীলা এলাকার আবুল বশর প্রকাশ বাইন্ন্যার পুত্র মোহাম্মদ শফিউল আলম (২০) গতকাল চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান করছিলেন। টেকনাফ থেকে বাসে চট্টগ্রাম আসার পর তিনি ট্রেনে চড়ে ঢাকা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার কাঁধে একটি ব্যাগ ছিল। একজন যাত্রী হিসেবে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবেই ব্যাগ নিয়ে ট্রেনে উঠার অপেক্ষা করছিলেন তিনি। তার কাছে ইয়াবা আছে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। কিন্তু তার শরীর ও ব্যাগ তন্নতন্ন করে খোঁজেও ইয়াবা পাওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু সোর্স নিশ্চিত করছিল যে, তার সাথে ইয়াবা রয়েছে। অবশেষে পুলিশ ব্যাগটি কেটে একেবারে তলায় ভাঁজ না পরার জন্য যে তার দেয়া হয় ওখান থেকে তারটি বের করে। কিন্তু তারের পরিবর্তে সেখানে পাওয়া যায় ৫ হাজার ১০০ পিস ইয়াবা। সহকারী কমিশনার ( কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এসব ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, রেল স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার ১০০ পিস ইয়াবাসহ শফিউল আলম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা বলেন, শফিউল ব্যাগের ভেতর কৌশলে লুকিয়ে টেকনাফ থেকে ঢাকায় ইয়াবা নিয়ে যাচ্ছিলেন। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়। ব্যাগের ভেতর থেকে ইয়াবা খুঁজে পেতে অনেক্ষণ সময় লাগে আমাদের। সুতা দিয়ে সেলাই করে সুপার গ্লু লাগিয়ে দেয়া হয়েছিল ইয়াবার উপর। এতে করে বুঝার কোনো উপায় ছিল না ভেতরে ইয়াবা রয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা চোরাচালান ও ইয়াবা পাচার ঠেকাতে এ ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমূল আসামি গ্রেপ্তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
পরবর্তী নিবন্ধমাদক কারবারিদের নতুন তালিকা হবে