স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্মকর্তার পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের হুমকি!

সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | শনিবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিলা তাসনিমকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়েছেন সেন্টমার্টিনগামী এক পর্যটক। সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ ধরতে না পারার জেরে উত্তেজিত ওই পর্যটক নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেন। গতকাল শুক্রবার সকালে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে এই ঘটনা ঘটে।

এ সংক্রান্ত বাকবিতণ্ডার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায় একদল পর্যটকইউএনও এবং জাহাজ কর্তৃপক্ষের মাঝে ত্রিমুখী বাকবিতণ্ডা চলছে। এ বিষয়ে ইউএনও এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা তাসনিম বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রতিদিন ২ হাজার পর্যটক যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তা নিশ্চিতে তদারকিসহ আরও নানা নিয়ম প্রতিপালনে ভোরে ঘাট এলাকায় দায়িত্বপালন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এমন সময় এক পর্যটক হঠাৎ আমাকে (ইউএনও) গ্রেপ্তারের হুমকি দেন। ওই পর্যটক দলটির দাবি, তাদের জাহাজ টিকিটে উল্লেখিত সময়ের আগে ঘাট ছেড়েছে। এই নিয়ে তারা হট্টগোল করছিলেন। আমি দায়িত্বরত অবস্থায় কারণ জানতে গেলে হঠাৎ তাদের মধ্যে ইব্রাহীম নামে এক ব্যক্তি নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা দাবি করে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যকে আমাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। ইউএনও তানজিলা আরও জানান, অনভিপ্রেত এ আচরণের ভিডিও সংরক্ষণ করা আছে। উনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।

এসময় ইব্রাহীম নামের ওই পর্যটক নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমি স্যারকে (ইউএনও) চিনতে পারিনি। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত এ ঘটনা ঘটেছে। এজন্য দুঃখিত। আমি ও আমার কলিগরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছি। আমাদের টিকিটে জাহাজ ছাড়ার সময় ৭টা লেখা ছিল, কিন্তু ঘাটে এসে শুনি সেই জাহাজ ৬টায় ছেড়ে গেছে।

এ ব্যাপারে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ মালিকদের সংগঠন সীক্রুজ ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, নদীর নাব্যতা ও জোয়ারভাটার কারণে জাহাজের সূচি পরিবর্তন হয়। ওই পর্যটকদের টিকিট নেওয়া বেক্রুজ নামের জাহাজটি নাব্যতার কারণে ঘাট পরিবর্তন করে অন্য ঘাটে অবস্থান করছিল। এ কারণে পর্যটকরা মনে করেছেন সেটি ছেড়ে গেছে। পরবর্তীতে সেই জাহাজের পরিবর্তে থাকা কেয়ারি সিন্দাবাদ নামে জাহাজে করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত সেই ব্যক্তি ও তার সঙ্গে থাকা ১১ জন পর্যটক সেন্টমার্টিন যান।

সদর উপজেলার ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই পর্যটক ও তার সঙ্গীদের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হয়েছে। ভ্রমণ আনন্দে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে তাদের সেন্টমার্টিন যাবার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি সম্পর্কে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে লিখিত জানানো হয়েছে।.

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ১৬ সংসদীয় আসনে ৪২ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ