স্বমহিমায় উজ্জ্বল চট্টগ্রাম বন্দর

লক্ষ্যমাত্রার বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

বছর শেষ হওয়ার আগেই চট্টগ্রাম বন্দর কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের টার্গেট স্পর্শ করেছে। গতকাল পর্যন্ত সাড়ে ৩১ লাখ টিইইউএস-এরও বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং করে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। গত বছর করোনাকালে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ে ধস এবং বিশ্বের ব্যস্ততম একশ’ বন্দরের তালিকায় বেশ পিছিয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম বন্দর এবার স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। কন্টেনারের পাশাপাশি খোলা পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। বন্দরে জাহাজের আনাগোনাও গত বছরের তুলনায় সন্তোষজনকভাবে বেড়েছে।
সূত্র বলেছে, করোনা মহামারীতে বিশ্বের শিপিং সেক্টরে দেখা দেয়া ধসের ধাক্কা চট্টগ্রাম বন্দরেও লেগেছিল। গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কন্টেনার এবং খোলা পণ্য হ্যান্ডলিংয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। আগের বছরের তুলনায় গতবছর বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে ধস দেখা দিয়েছিল। এতে করে বিশ্বের ১০০ ব্যস্ততম বন্দরের তালিকায় ৫৮তম স্থান থেকে ৯ ধাপ পিছিয়ে গিয়েছিল চট্টগ্রাম বন্দর। গতবছরের কার্যক্রমের উপর চলতি বছর প্রণীত তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৬৭তম। চলতি বছর বন্দর কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ায় এই তালিকায়ও ঘুরে দাঁড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছরের আরো চারদিন বাকি রয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ৩১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬৭ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। এ বছর চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩১ লাখ টিইইউএস। বাকি চারদিনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আরো ২০ হাজার টিইইউএস-এর বেশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। বিগত বছর বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭ টিইইউএস। এক বছরের ব্যবধানে কন্টেনার
হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ৩ লাখ টিইইউএস-এর বেশি বৃদ্ধি পাওয়াকে বন্দরের স্বাভাবিক গতিতে ফেরা বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০১৯ সালে কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ১৮৭ টিইইউস। করোনার অভিঘাতে গত বছর তা দুই লাখেরও বেশি কমে গিয়েছিল। ২০১৮ সালে কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৯৬ টিইইউএস এবং ২০১৭ সালে হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৩ টিইইউএস। কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের পাশাপাশি চলতি বছরের গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ১১ কোটি ৫০ লাখ ৭৬ হাজার টন খোলা পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে। গত বছর (২০২০ সালে) এর পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার টন। ২০১৯ সালে ছিল ১০ কোটি ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টন।
গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ৯০টি। গতবছর এসেছিল ৩ হাজার ৭২৮টি জাহাজ। ২০১৯ সালে এর সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮০৭টি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানিয়েছেন, বেশ কিছু সীমাবদ্ধতার মাঝেও বন্দর ব্যবহারকারী এবং বন্দরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরলস চেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দরে স্বাভাবিক গতি ফিরে এসেছে। কর্তৃপক্ষের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে নিয়ামক শক্তি হিসেবেও কাজ করেছে। করোনাকালে লকডাউনের মাঝেও বন্দরে সেবা চালু রাখার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এই গতি নিশ্চিত করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা রেকর্ড সৃষ্টি করেছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
আমাদের প্রত্যাশা ছিল ১০ থেকে ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন। সেটি আমরা অর্জন করতে সক্ষম হবো বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমদানি ও রপ্তানি নিবন্ধন সনদ ইস্যুতে জটিলতা
পরবর্তী নিবন্ধনির্বাচন দেখে যেতে পারলেন না মেম্বার প্রার্থী মনির