জীবনের প্রতিটি বাঁকে যখন অনিশ্চয়তা, তখন কিছু মানুষ বুক ভরা সাহস আর স্বপ্ন নিয়ে পথ খুঁজে নেয়। তেমনই একজন নারী উদ্যোক্তা, নাজমা আক্তার। রাজধানীর এক ছোট্ট বাসায় বসেই যাঁর ব্যবসা এখন পৌঁছে গেছে দেশের নানা প্রান্তে।
চার বছর আগে যখন গৃহস্থালী কাজ সামলাতে সামলাতে নাজমা ভাবলেন নিজের কিছু একটা করবেন, তখন হাতে ছিল মাত্র ৫ হাজার টাকা। শুরুটা হয়েছিল এক কেজি মসলার প্যাকেট বানিয়ে পাড়া–মহল্লায় বিক্রি দিয়ে। ঘরের হ্যান্ড ব্লেন্ডারেই বানানো সেই মসলার গন্ধে আকৃষ্ট হয় অনেকেই। কিন্তু শুরুতে সবাই বিশ্বাস করেনি। পরিবার, সমাজ এমনকি কাছের মানুষরাও বলেছিল, ‘তুমি পারবে না’। কিন্তু নাজমা নিজেকে প্রমাণ করেছেন। প্রতিদিন ছোট ছোট জয় তাকে শক্তি দিয়েছে। ফেসবুক পেজ খুলে অনলাইন অর্ডার নিতে শুরু করলেন। গ্রাহকের ভালোবাসা পেলেন। এরপর এল প্রথম বড় অর্ডার, এক জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট চেইন থেকে। ‘আমি শুধু পণ্য বিক্রি করি না, আমি আমার গল্প বিক্রি করি’ বলেন নাজমা। তার বিশ্বাস, একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে বড় পুঁজি তার স্বপ্ন এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস।
আজ তার ব্র্যান্ড “নাজমা’স স্পাইস” ১২ জন নারীকে কর্মসংস্থান দিয়েছে। তার দল কাজ করছে গুণগত মান বজায় রেখে মশলা, আচার এবং দেশি খাবার তৈরি করতে। তিনি আরও বলেন, “এসএমই খাতই হলো দেশের অর্থনীতির আসল চালিকা শক্তি। বড় বড় কোম্পানি গড়ে ওঠে এমন ছোট ছোট স্বপ্ন থেকেই।” এসএমই দিবসে নাজমার মত হাজারো উদ্যোক্তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, যারা চুপিচুপি বদলে দিচ্ছে আমাদের সমাজ, আমাদের অর্থনীতি। তাদের গল্প যেন নতুনদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে দাঁড়ায়।