পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রবেশদ্বার চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে নির্মিত ছয় লেনের মাতামুহুরী সেতুর কাজ শেষ হয়েছে কয়েক মাস আগে। এর পর তিন লেন করে উভয় দিকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়ে যায়। এতে দীর্ঘ সময়ের যানজট থেকে মুক্ত হয় ওই এলাকা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, ৩৫৫ দশমিক ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হওয়া স্বপ্নের এই মাতামুহুরী সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে আজ বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মহাসড়কের এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩২১ দশমিক ৫০ মিটার এবং প্রস্থ ৩১ দশমিক ২০ মিটার। এদিকে একইসাথে উদ্বোধন করা হবে মহাসড়কের চট্টগ্রামের দোহাজারীর শঙ্খ নদীর ওপর ২৬৩ দশমিক ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২৩৮ দশমিক ৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৩১ দশমিক ২০ মিটার প্রস্থের ছয় লেনের সেতুটিও।
মাতামুহুরী সেতুর তিন লেনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ায় ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের শুরুতে যানবাহন চলাচলের জন্য প্রাথমিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। তিন লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরুর পর ভেঙে ফেলা হয় পুরনো দুই লেনের জরাজীর্ণ সেতুটি। ওই স্থানে শুরু করা হয় বাকি তিন লেনের নির্মাণকাজ। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো–অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে মাতামুহুরীসহ চারটি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড ইমপ্রুভমেন্ট নেটওয়ার্কের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপক জুলফিকার আহমেদ আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম–কঙবাজার মহাসড়কের চারটি সেতুর মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ছয় লেনের মাতামুহুরী ও শঙ্খ সেতুর কাজ শুরু করা হয়। অনেক আগে সেতু দুটির শতভাগ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ায় যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেতু দুটি আগামীকাল (আজ) শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য বিবরণী থেকে জানা যায়, আজ দেশব্যাপী ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভারপাস ও নবনির্মিত অন্যান্য অবকাঠামো গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে রয়েছে ২৭টি নবনির্মিত সেতু।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনালের এক কর্মকর্তা আজাদীকে বলেন, ছয় লেনের সেতুগুলোর মধ্যে মাঝখানের চার লেনে চলাচল করবে দূরপাল্লার ও দ্রুতগতির যানবাহন। বাকি দুই লেন দিয়ে চলবে ধীরগতির তথা স্থানীয় যানবাহন। এছাড়া এই দুই লেনে (উভয় পাশে) ফুটপাত হিসেবে ব্যবহারের জন্য এক মিটার করে উন্মুক্ত থাকবে।
তিনি জানান, মাতামুহুরী সেতুর পূর্ব প্রান্তে মহাসড়কের জিদ্দাবাজার পর্যন্ত (কাকারা রাস্তার মাথা) এবং পশ্চিম প্রান্তে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কার্যালয় পর্যন্ত অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য জাফর আলম আজাদীকে বলেন, ডেল্টা প্ল্যানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ছয় লেনের এই সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়। এতে করে চট্টগ্রাম–কঙবাজার মহাসড়কে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। চকরিয়া পৌর শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র চিরিঙ্গায় দূরপাল্লার যানবাহনের চাপ কমে এসেছে।