স্বপ্নই সাফল্য

মিতা পোদ্দার | শুক্রবার , ১ আগস্ট, ২০২৫ at ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

আচ্ছা জেগে জেগে স্বপ্ন দেখেছেন কি কেউ? আমি দেখি। তবে আমার সেই স্বপ্ন কিছু না পাওয়ার মাঝে হঠাৎ পাওয়া সফলতা। আর সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো জেগে জেগে স্বপ্ন দেখার মজাই আলাদা। সাফল্য ব্যক্তিজীবনের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়। জীবন কতটা সুন্দর তা নির্ভর করে অর্জিত সাফল্যের ওপর। আমরা যদি স্বপ্ন কে বাস্তবে পরিণত করতে চাই, আমরা যদি সফল হতে চাই তবে প্রথমে আমাদের অনেক বড় স্বপ্নদর্শী হওয়া দরকার। আমাদের কল্পনার ক্যাম্পাসে রং দিয়ে সেই স্বপ্নকে আঁকাআঁকি করতে হবে। কারণ যদি আমরা স্বপ্ন দেখি তাহলে একদিন তা সফল হবে আর যদি না দেখি তাহলে তা কোন দিন হবে না। আমরা যদি কিছু সময় আমাদের নিজেদের চোখ দুটো বন্ধ করি।

যদি ভাবি আমাদের ভবিষ্যত স্বপ্নটা দেখতে কেমন হবে? প্রতিটি দিক থেকেই সেই স্বপ্ন সম্পর্কে ভাবি। এখন এই ভাবনাটা কে আরও একটু স্পষ্টভাবে, আরও একটু বিশদভাবে ভাবি। কল্পনায় যতটা ভাবা যায়। এবার চোখ দুটো খুলি এবং বাস্তবে চিন্তা করি। কী বুঝলেন আপনার কাঙ্‌ক্িষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন তো। একবার আমরা যখন আমাদের লক্ষ্যগুলি স্থির করে ফেলব, এর সাথে সাথে কর্ম পরিকল্পনা অনুসরণ করবো তখন দেখবেন জেগে বা ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্ন আপনাকে ঠিক কোথায় নিতে চাচ্ছে? মানুষ স্বাপ্নিক, তবে বাইরের পৃথিবীর বিচিত্র সংঘাতে মাঝে মাঝে জেগে ওঠে, কিন্তু খুব শিগগীরই আবার কল্পনার সুখের জগতে স্বেচ্ছায় ঝাঁপ দেয়। ফ্রয়েড দেখিয়েছেন স্বপ্নের চিত্রায়নের মধ্যে আমাদের অপূর্ণ কামনারা পরিতৃপ্তি লাভ করে। যারা পৃথিবীতে অন্যদের চেয়ে ভিন্ন কিছু করতে চায় নিজের চিন্তাভাবনার আলোকে। যারা সুযোগ এলেই চেষ্টা করে নিজের চিন্তাভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে, তাদের মনমেজাজের পরির্বতন নির্ভর করে বহির্জগতকে জয় করার ক্ষেত্রে তার সাফল্য ও ব্যর্থতার ওপর। একটি অবিচলিত স্বভাব, ধৈর্য এবং বিশেষ রসবোধে সুখের অন্বেষণ খুব মূল্যবান গুণাবালি। যেখানে সুখ আছে সেখানে সুখ বিকশিত হয়। চাপ এবং হতাশা অথবা বিষাদের পরিবেশে ভালোবাসা দ্রুত শুকিয়ে যায়। নিরাশাবাদী লোক অন্যের ক্ষতির কারণ হয়। স্বতঃস্ফূর্ত সাফল্যকে আকর্ষণ করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে স্বপ্ন। বিশ্বাসযুক্ত সৃজনশীল কল্পনার নামই হচ্ছে স্বপ্ন। আসলে ইচ্ছাশক্তি নয়, স্বপ্নই সাফল্য সৃষ্টি করে। ইচ্ছাশক্তি হচ্ছে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হাতিয়ার। ইচ্ছাশক্তি হচ্ছে কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে চিন্তা ও কাজকে নিয়ন্ত্রিত করার ক্ষমতা। কিন্তু স্বপ্ন ছাড়া ইচ্ছাশক্তি বেশিদূর এগুতে পারে না। আমাদের সমগ্র কল্পনা, চিন্তা ও অনুভূতিকে লক্ষ্যের সঙ্গে একাত্ম করতে হবে। অর্থাৎ মানসিকভাবে নিজেকে সাফল্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। সফল হওয়ার জন্য স্বপ্ন তৈরি করার পরই প্রয়োজন নিজেকে প্রস্তুত করা। চূড়ান্ত লক্ষ্যের জন্য স্বপ্নকে সবসময় মনের সামনে রাখতে হবে এবং সে পর্যায়ে নিজেকে উত্তীর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় গুণ, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা অর্জনের প্রতিটি সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার এই যে, প্রতিটি সফল মানুষ নিজের জানা হোক বা অজানায় হোক এইভাবেই সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছেছেন। মেঘের আকাশ থেকে মুছে যাওয়ার মতো মানুষেরও পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যেতে হয়। এই স্বপ্নবিলাসীরা জানে জীবনের শেষ মুহূর্তে বাস্তবতার শিকার হতে হবে। তাই জেগে হোক আর ঘুমিয়ে হোক আসুন সবাই সুন্দর স্বপ্ন দেখি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভালোবাসার জয়
পরবর্তী নিবন্ধশ্রাবণের বৃষ্টির নেশা