স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল ও ১৬ কর্মীর বিরুদ্ধে নৌকার প্রার্থীর মামলা

চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন

চকরিয়া প্রতিনিধি | বুধবার , ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সরকার দলীয় নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নাগরিক কমিটি মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের জিয়াবুল হক ও তাঁর ১৬ কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে ঐ ঘটনার পর নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা লাঠিসোটা ও ঝাড়ু হাতে নিয়ে উপজেলা পরিষদ ও পৌরশহরের চিরিঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
মামলার এজাহারে বাদী আলমগীর চৌধুরী অভিযোগ এনেছেন, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাজধানী পাড়ায় নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তাঁর তিন কর্মী আতাউল হক সবুজ, রমেশ খান ও রাজীব খান। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হক সদলবলে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা আহত হন। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল লুট করেন আসামিরা।
মামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হক ছাড়াও আসামি হওয়া অন্য ১৬ কর্মী হলেন মিজানুর রহমান, মো. রুবেল, দলিল, আবদুল কাইয়ুম, শিব্বির আহমদ, হুমায়ুন কবির, হাসান আল বশরী, মো. শোয়াইব, মিজানুর রহমান, আবদুল মজিদ, নুরুল আবচার, নুরুল হক, সাদ্দাম হোসেন, মিশুক মনির, মো. পারভেজ, আবদুল জলিল। মামলা রুজুর পর নৌকার প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী বলেন, ‘আমার কর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছি। এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আসামিদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করবে বলে আমার বিশ্বাস।
তবে নৌকার প্রার্থীর করা অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হক দাবি করেছেন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন থেকে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে নারীদের উত্ত্যক্ত করার সময় সবুজ নামের বহিরাগত এক ইভটিজারকে গণপিটুনির দেয় জনতা। তাহলে আপনার বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ আসছে? এমন প্রশ্নে জিয়াবুল হক বলেন, ‘দুইদিন আগেও নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল। আমার বিজয় নিশ্চিত জেনে নৌকার প্রার্থী ও তাঁর লোকজনের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তাই শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে নির্বাচনী ফায়দা হাসিলের জন্য ইভটিজিংয়ের ঘটনাকে নির্বাচনী সহিংসতায় রূপ দিয়ে মিথ্যা মামলা রুজু করেছেন। যা নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করে তুলেছে। আমার কর্মী সমর্থকেরা গ্রেপ্তার আতংকে এখন ঘরছাড়া। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হকের পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করে অবিলম্বে এই অপতৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানানো হয়।
চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, নৌকার প্রার্থী বাদী হয়ে এজাহার দিলে তা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ দৈনিক আজাদীকে বলেন, সোমবারের ঘটনার পর একটু উত্তেজনা ছড়ালেও বর্তমানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোথাও কোন আচরণবিধি লঙ্ঘন বা অঘটনা ঘটছে কী-না তা কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য প্রশাসন কাজ করছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি সবসময় পেছনের দরজা খোঁজে : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধসেরা করদাতার সম্মাননা পেল উত্তরা গ্রুপ