স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও গণতান্ত্রিক করতে চট্টগ্রামে ‘গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জনআকাঙ্ক্ষার আলোকে স্থানীয় সরকার সংস্কার’ শীর্ষক সংলাপের আয়োজন করে গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরাম ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরীর স্টেশন রোড়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন হলে আয়োজিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন আইএসডিই নির্বাহী পরিচালক ও ক্যাব ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন।
গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের সমন্বয়কারী কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় এতে অতিথি ছিলেন সাংবাদিক এম নাসিরুল হক ও গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের ফ্যাসিলিটেটর অনিরুদ্ধ রায়। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ক্যাব চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার সাবেরী।
সংলাপে সাবেক জেলা জজ জসিম উদ্দীন, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চবি ফরেস্ট্রি ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. খালেদ মিজবাহউজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ফাতেমা বাদসা, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় বিশ্বাস, প্রাইভেট প্র্যাকটিশনার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. অহিদুল ইসলাম, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সমিতির সাবেক সভাপতি নুর মোহাম্মদ, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নানসহ আরও অনেকে অংশ নেন।
সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় সরকার সংস্কারের ছয়টি মূল প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধি, সেবা ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ, জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নিশ্চিতকরণ, রাজনৈতিক কাঠামোর সংস্কার, প্রশাসনিক জটিলতা দূরীকরণ এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও গণবান্ধব করা।
আইএসডিই নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সংস্কারের বিষয়ে কাজ করছে। দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়ে আলোচনা ও আন্দোলন চলছে, কারণ স্থানীয় সরকার জনগণের প্রত্যাশা ও চাহিদার প্রতিফলন ঘটায়। আমরা চাই, সংস্কারের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করা হোক।
গভার্নেন্স অ্যাডভোকেসি ফোরামের ফোকাল পার্সন অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ২০০৭ সালে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তখন সংশ্লিষ্ট ২৭টি সংস্থার সঙ্গে আমরা সংলাপ করেছিলাম এবং ৪০টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে সেই প্রস্তাবগুলোর প্রায় সবকটিই বাস্তবায়ন হয়েছিল, যদিও দুটি বাদ পড়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যে বৈষম্য বিদ্যমান, তা দূর করতে হবে। সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে যে জটিলতা রয়েছে, সেগুলো কমিয়ে আনতে হবে। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা যেন আরও গণবান্ধব ও কার্যকর হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
সংলাপে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বক্তারা বলেন, সেবার বিকেন্দ্রীকরণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে এবং বিভাগীয় পর্যায়ের সুপারিশগুলো জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে হবে।