বাঁশখালীতে স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে মো. হামিদ উল্লাহ (৩৮) প্রকাশ কালামিয়া নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল উপজেলার সরল ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সরলের হাজিরখীল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হামিদ উল্লাহ ওই এলাকার মৃত মাহফুজুর রহমানের ছেলে। ঘটনার সময় তার স্ত্রী মর্তুজা বেগম (৩২) ও বড় ছেলে মিনহাজ (১০) আহত হয়েছে। পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়জনকে আটক করা হয়েছে। জানা যায়, গতকাল সোমবার ভোর সাড়ে ৩টার সময় কয়জন লোক এসে ঘরে প্রবেশ করে হামিদ উল্লাহকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করে। পরে হামিদের মৃত্যু নিশ্চিত হলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ সময় পরিবারের সদস্যদের চিৎকারের এলাকার লোকজন জড়ো হয়। ভোরে পুলিশ এসে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার সময় হামিদের লাশ নিজ বাড়ি এলাকায় নিয়ে আসে স্বজনেরা। বিকাল ৬টার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এ সময় নিহতের স্ত্রী মর্তুজা বেগম বলেন, বাবা মায়ের পুরাতন বসত বাড়ির অদূরে কয়েক শতক জায়গায় বেড়া দিয়ে দুরুমের ঘর তৈরি করেন হামিদ। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর নতুন বাড়িতে উঠি। এলাকার কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি আমাদের নতুন বাড়ি ও ভিটা করার পর থেকে টাকা দাবি করে আসছে। তা না দেওয়াতে তারা সোমবার ভোরে আমার ও ছেলেমেয়েদের চোখের সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে আমার স্বামীকে। তাদের কয়জনকে তিনি চিনতে পেরেছেন বলে জানান।
নিজেকে ৫ মাসের অন্তঃস্বত্তা দাবি করে মর্তুজা আরো বলেন, আমার ৫ ছেলে মেয়ে ও অনাগত সন্তানকে কে দেখবে? কে তাদের ভরন পোষণ চালাবে? আমি কী অন্যায় করেছি? কেন আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করল তারা? ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে আমি কীভাবে চলব? এ সময় হামিদের ছেলেমেয়েদের আর্তনাদে উপস্থিত লোকজন কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সরলের হামিদ উল্লাহ হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে রয়েছে। বেশ কয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে প্রকৃত আসামি নিশ্চিত করা যাবে। গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত সুনিদিষ্ট কোনো মামলা হয়নি বলে তিনি জানান।
আতংকিত এলাকার জনগণ : জানা যায়, সরল ইউনিয়নের সাগর উপকূলের ১ নং ও ২ নং ওয়ার্ডের জনগণ প্রায় সময় নানা কারণে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। দাঙ্গা–হাঙ্গামা ও লবণ মাঠ দখলের বিরোধে এ এলাকায় র্যাবের ক্রস ফায়ারে নিহত এবং আটক রয়েছে। প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে এ এলাকায়। তারই জের ধরে এ ঘটনা হতে পারে বলে অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান। এ সব ঘটনার পর থেকে আতংকে থাকেন এ এলাকার জনগণ।