আয়ের উৎস আড়াল করে ২০টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে চট্টগ্রাম–৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। এতে ১৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও করা হয়েছে। এছাড়া নিজের অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে স্ত্রী ইসমত আরা বেগমকে ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনে সহায়তার অভিযোগে পৃথক আরো একটি মামলা করা হয়েছে। এতে স্বামী–স্ত্রী দুজনকেই আসামি করা হয়েছে। গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বাদী হয়ে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এ মামলা দুটি দায়ের করেন।
আয়ের উৎস আড়াল করে ২০ টি ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে বলা হয়, দিদারুল আলমের নীট সম্পদের মূল্য ৫৭ কোটি ৬০ লাখ ৮৯ হাজার ৭০৮ টাকা। এর মধ্যে তার গ্রহণযোগ্য আয় ৪৩ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার ৪০১ টাকা। বাকী কোটি ৯৮ লাখ ৩৯ হাজার ৩০৭ টাকা তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ। এজাহারে আরো বলা হয়, দিাদরুল আলমের বিরুদ্ধে ২০টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪৭৫ কোটি ৯৮ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৩ টাকা জমা ও ৪৭২ কোটি ৯০ লাখ ৫৬ হাজার ১৯৫ টাকা উত্তোলনসহ মোট ৯৪৮ কোটি ৮৮ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩৮ টাকা আয়ের উৎস আড়াল করে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন। যা দুদক আইন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানিলন্ডারিং আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এদিকে সাবেক এমপি দিদারুল ও তার স্ত্রী ইসমত আরা’র বিরুদ্ধে দায়ের করা পৃথক অপর মামলাটির এজাহারে বলা হয়, ইসমত আরা তার স্বামীর সহযোগিতায় জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৪৫০ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এ সম্পদ তার স্বামী দিদারুল আলম সংসদ সদস্য থাকার সময় ঘুষ–দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন। যা দুদক আইন ও দণ্ডবিধি অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ দৈনিক আজাদীকে দিারুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়েরের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত, দিদারুল আলম বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড ও নগরীর একাংশ) আসন থেকে ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন দিদারুল আলম।