স্ত্রীসহ এস আলমের বিরুদ্ধে মামলা

১ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি দুই ব্যাংকের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ

জনতা ব্যাংক শেখ মুজিব রোড, পাঠানটুলি শাখার ১ হাজার ৯৬৩ কোটি ৫৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৫৯ টাকার ঋণ খেলাপির অভিযোগে এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভিনসহ ১০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় ১৪ টি প্রতিষ্ঠানকেও বিবাদী করা হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমানের আদালতে জনতা ব্যাংক শেখ মুজিব রোড, পাঠানটুলি কর্পোরেট শাখা মামলাটি দায়ের করে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম দৈনিক আজাদীকে বলেন, আদালত মামলা গ্রহণ করে গ্রুপটির মালিকানায় থাকা দুই ব্যাংক তথা ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৭ কোটি ৪৩ লাখ শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এসব শেয়ার অগ্রিম ক্রোক চেয়ে করা পৃথক দুটি দরখাস্তের শুনানি শেষে শেয়ার হস্তান্তরে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উক্ত শেয়ার সমূহ রায়ের আগে কেন অগ্রিম ক্রোক করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। মামলার বিবাদীরা হচ্ছেন, সাইফুল আলম মাসুদ, তার স্ত্রী ফারজানা পারভিন, মো. আব্দুছ ছবুর, মো. রাশেদুল আলম, আবদুল্লাহ হাছান, আবদুস সামাদ (লাবু), ওসমান গণি, শাহানা ফেরদাউস, মিশকাত আহমদ, মো. শহীদুল আলম, গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন, এস আলম ট্রেডিং, এস আলম রিফাইনস সুগার, কোল্ড রোল্ড স্টিলস, ভেজিটেবল অয়েল, সুপার এডিবল অয়েল, এস আলম স্টিলস, সিমেন্ট, ব্রাদার্স, সয়া সিড, ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং, পাওয়ার জেনারেশন, লাঙারি চেয়ার কোচ সার্ভিস এবং চেমন ইস্পাত লিমিটেড।

জনতা ব্যাংকের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সাইফুল আলম মাসুদ ও তার ভাই আবদুস সামাদ লাবুর মালিকানায় থাকা দুটি ব্যাংকের শেয়ার হস্তান্তরের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। একইসঙ্গে ঋণের বিষয়টি যথাযথভাবে পরিপালন করা হয়েছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে দুদককে নির্দেশনাও দিয়েছে আদালত। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০০৯ সালে এস আলম গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা না মেনে সাধারণ বীমা ভবনে অবস্থিত জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম করপোরেট শাখা থেকে প্রাথমিকভাবে ৬৫০ কোটি টাকা ঋণ নেয়। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত কোনো ঋণ পরিশোধ না করায় তা সুদেআসলে ১ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এছাড়া এ শাখা থেকে এস আলম গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নামেও অন্তত ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণ আছে। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা জানান, গত ২০ নভেম্বর জনতা ব্যাংক খেলাপি ঋণ আদায়ে এস আলম গ্রুপের ১ হাজার ৮৬০ শতাংশ জমি নিলামে তোলে। জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রামের সাধারণ বীমা ভবন করপোরেট শাখা থেকে এই ঋণ নেওয়ার ফলে শাখাটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে নিলাম ডাকে। আপাতত গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের ঋণ আদায়ে নিলাম ডাকা হলেও ধীরে ধীরে বাকি ঋণের জন্য অন্য বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তোলা হবে বলে জানা গেছে। নিলামে তোলা সম্পদগুলো চট্টগ্রামের পটিয়া, কর্ণফুলী, কোতোয়ালী, চান্দগাঁও, বাকলিয়া ও গাজীপুরে। এসব জমির বাজারমূল্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার মতো। বাকি অর্থ আদায়ে গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের নামে থাকা অন্যান্য সম্পত্তিও পর্যায়ক্রমে নিলামে তোলা হবে বলে জানান ব্যাংক কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৪ ওয়ার্ড সচিবকে একযোগে বদলি
পরবর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনা-আ. লীগের দুর্নীতির চিত্র পাঠ্যবইয়ে আসা উচিত : ড. ইউনূস