১০০ টেস্ট খেলার সুদীর্ঘ ভ্রমণ, পুরোটা সময় ক্রিকেটে বুঁদ হয়ে থাকা, সেই সুযোগটুকুর জন্য মুশফিকুর রহিম কৃতজ্ঞতা জানান স্ত্রী জান্নাতুল কিফায়াতের কাছে। এই ১০০ টেস্ট পর্যন্ত আসতে তাকে খেলতে হয়েছে ২০ বছরের বেশি সময়। এর মধ্যে গত ১১ বছর তার জীবনের সঙ্গী জান্নাতুল। নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ত্যাগের কথা বলতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক শোনান তার ক্যারিয়ারে স্ত্রীর অবদানের কথা। ‘আমার মনে হয়, সবচেয়ে বড় ত্যাগ যে সাপোর্ট আমার স্ত্রী দিয়েছে। আপনারাও জানেন বা দেখেন যে, আমি হয়তো বা অন্যদের তুলনায় বেশি একটু অনুশীলন করি, তবে এটা কখনও সম্ভব হতো না যদি আমার ঘরে এরকম একটা পরিবেশ না থাকতো। আপনারা কজন জানেন, জানি না। আমরা যৌথ পরিবারে থাকি। তো দেখা যায় যে, আমার স্ত্রীর ওপর যে প্রত্যাশাটা আছে এবং সবাইকে ওইভাবে ম্যানেজ করা, কিছু হলেই ওকে ফোন দিয়ে এটা সমস্যা বা ওটা, বা যত জরুরি প্রয়োজন, আমার দিক থেকে না আসা পর্যন্ত ও যদি সবকিছু করতে পারে, সেগুলা ম্যানেজ করে। এটা বিশাল ব্যাপার। আমি বলব যে আমার জন্য এটা অনেক বড় ত্যাগ।’ সময়ের পরিক্রমায় মুশফিক–জান্নাতুল দম্পতির ঘর আলো করে এসেছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তবে সন্তানদের বড় করে তুলতে বাবা–মায়ের যে প্রচেষ্টা ও সময় দিতে হয়, সেখানেও অনেক ছাড় পেয়েছেন মুশফিক। ধরেন, রাতে স্বাভাবিকভাবেই ছোট বাচ্চারা সারারাত ঘুমায় না। তবে আমাকে কোনো নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়নি। কারণ সে পুরাটা সময় রাত জেগে বাচ্চাদেরকে মানুষ করেছে এবং আমাকে ওই টেনশন থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেছে। তার কাছে আমি সবসময় কৃতজ্ঞ। ‘হয়তো বা কখনও এরকম করে তার সামনেও বলা হয় না। এটারও একটা অভিযোগ আছে। তবে সত্যি বলতে, আমি সেদিক থেকে ভাগ্যবান। আমার বিশাল একটি অংশ এটা। আমার ১১ বছরের মতো হয়েছে সংসার জীবন। আমি মনে করি যে আমার ক্রিকেটের ওপর প্রভাব যদি ২০১৪ সাল থেকে দেখেন, সে আমার জীবনের অনেক বড় অংশ। সেদিক থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই।’ বিয়ের আগে ব্যাটিং গড় ছিল ৩৩.৬০, সেঞ্চুরি ছিল ৪০ টেস্টে ৩টি। বিয়ের পর থেকেই এ পর্যন্ত তার ব্যাটিং গড় ৪১.৮৮, ৬০ টেস্টে সেঞ্চুরি ১০টি। তার ক্যারিয়ারে স্ত্রীর অবদানকে অবশ্যই সাধারণ কিছু সংখ্যায় তুলে ধরা যায় না। ক্রিকেটীয় দিক থেকেও তিনি সময়ের সঙ্গে পরিণত হয়েছেন, শিখেছেন, সমৃদ্ধ হয়েছেন এবং মাঠে সেসব কাজে লাগিয়েছেন। তবে তার জীবনে স্ত্রীর ইতিবাচক প্রভাব কতটা, তা তিনি যেমন বলছেন, তেমনি ফুটে ওঠে তার ক্যারিয়ারেও।









