স্ত্রীকে হত্যার পর ইটভাটায় কাজ নিয়ে আত্মগোপন

৫ মাস পর গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ

যৌতুকের জন্য অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে নির্যাতন করে হত্যার পাঁচ মাস পর ঘাতক স্বামী সুমনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭ এর একটি টিম। গতকাল শনিবার ভোরে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার চন্দ্রনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সুমন ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার বাদুরখিল গ্রামের বাসিন্দা। সে ফটিকছড়ির চা বাগান এলাকায় মোটরসাইকেলে লোকজন আনা-নেওয়ার কাজ করতো। তবে স্ত্রীকে হত্যার পর ইটভাটায় ‘জোগালির’ কাজ নিয়ে আত্মগোপনে ছিল। র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারী ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আজাদীকে জানান, গত বছর ৩১ অক্টোবর যৌতুকের টাকার জন্য বন্ধু টিপুর মোটরসাইকেলে সুমন তার স্ত্রী মনিকে নিয়ে শ্বশুরের কর্মস্থল দাঁতমারায় যায়। টাকা না পেয়ে ফেরার পথে ভুজপুর কালিগঞ্জ এলাকায় আসার পর চড় মেরে স্ত্রীকে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়। এরপর ইট দিয়ে মাথায় এলোপাথারি আঘাত করে। এ সময় তার বন্ধু টিপুও মনির হাত চেপে ধরে। এ সময় সুমন তার স্ত্রীর চোখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিয়ে বাম চোখ নষ্ট করে দেয়। পরে মোটরসাইকেলের গরম সাইলেন্সার পাইপের সঙ্গে বুক চেপে ধরে পুড়ে ফেলে। হত্যাকান্ডের পর ফটিকছড়ি থেকে পালিয়ে এসে ইটভাটায় জোগালির কাজ নেয়। সুমনের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে সে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত। একজন স্বাভাবিক মানুষ আট মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রীকে এভাবে মারধর করতে পারে না। স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে ভেবে সুমন ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছিল বলেও জানান এ র‌্যাব কর্মকর্তা।
তিনি জানান, সুমন তার স্ত্রীকে প্রথমে নাজিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে নিয়ে যায়। কিন্তু মনির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে মনিকে ভর্তি করে সুমন পালিয়ে যায়। প্রায় ২৬ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২৫ নভেম্বর মনি মারা যান। এ ঘটনায় মনির ভাই মো. আব্বাস বাদী হয়ে ভুজপুর থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় সুমনের সহযোগী টিপুকে এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়। সুমন এতদিন পালিয়ে ছিল।
র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারি ক্যাম্প কমান্ডার মাহফুজুর আরও বলেন, সুমন এর আগে দুটি বিয়ে করেছিল। আগের বিয়ের কথা গোপন করে মনিকে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য মনিকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। বাধ্য হয়ে মনি তার বাবার কাছ থেকে দুই দফায় ৫০ ও ৬০ হাজার করে টাকা এনে দেয়। কিন্তু আরও টাকা এনে দেওয়ার জন্য সে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন অব্যাহত রাখে। সুমন আগে ফটিকছড়িতে চা বাগান এলাকায় মোটরসাইকেলে লোকজন আনা-নেওয়ার কাজ করতো। সেই সূত্রেই চা শ্রমিক মনি আক্তারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবরিস জনসনের উপর রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা
পরবর্তী নিবন্ধতিন বছর পর ফের সক্রিয় মানব পাচারকারী চক্র