চন্দনাইশে বিয়ের ৮ মাসের মাথায় স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার ভোরে সাদিয়া সুলতানা আরফি (১৯) নামের ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় স্বামী মো. মিজানুর রহমান রিদুয়ানকে (৩০) আটক করা হয়েছে। রিদুয়ান চন্দনাইশ উপজেলার বরকল ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম শরীফের পুত্র।
জানা গেছে, সাতকানিয়া উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ প্রকাশ জাহেদের কন্যা সাদিয়া সুলতানা আরফির সঙ্গে মিজানুর রহমান রিদুয়ানের ৮ মাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর পরিবারের লোকজন আরফিকে নির্যাতন করত। স্থানীয়দের দাবি আরফির স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন। বুধবার ভোরে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে মরদেহ বাথরুমে ঢুকিয়ে রাখে। সকালে ঘরের দরজা খুলতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে আরফির মরদেহ বাথরুমে পড়ে আছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী রিদুয়ানকে আটক করেছে পুলিশ।
ভিকটিম আরফির মামা নাজিম উদ্দীন জানান, ঘাতক রিদুয়ানের মানসিক সমস্যা ছিল না। বিগত এক–দেড় মাস আগে ব্যবসা করার জন্য সে তার শ্বশুরের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় ভাগ্নির ওপর নির্যাতন শুরু করে রিদুয়ান ও তার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার দিন রাতে আমার ভাগনিকে মেরে বাথরুমে ঢুকিয়ে রাখে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আমাদের খবর দেয়া হয় আরফির অবস্থা খারাপ, বেশি রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে বলে আমরা রওয়ানা দিই। ভোর সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে আমরা পৌঁছে দেখি ঘাতক রিদুয়ান স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়িতে ঘুমাচ্ছে। আমাদের উপস্থিতির খবর পেয়ে সে তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আরফির লাশ বাথরুম থেকে টেনে বের করে। এ সময় সে পাগল সেজে পরনের কাপড়–চোপড় খুলে উলঙ্গ হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তার পরিবারের লোকজন ও এলাকার কিছু ব্যক্তি তাকে পাগল সাজানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আরফি কোনো সময় বলেনি রিদুয়ান কোনো সময় মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। মূলত টাকা না পেয়েই তাকে রাতে মারধর করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রবাসী ভাইয়ের মুরগী খামারসহ ব্যবসাও দেখাশোনা করে রিদুয়ান। এ ঘটনায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও জড়িত বলে তাদের ধারণা।
চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরীর পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। লাশের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।