স্ত্রীকে খুন করে পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে পালায় স্বামী

৫ মাস পর গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ at ৪:৪৬ পূর্বাহ্ণ

পাঁচ মাস আগে নগরীর বন্দরটিলায় স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্ত্রীকে খুন করে লাশ পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে রাখেন পেশায় রিকশা চালক ওই যুবক। এরপর তার শিশু সন্তানকে বাড়িওয়ালার বাসায় রেখে থানায় যান সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে। আরও দুইদিন চট্টগ্রামে অবস্থান করে এরপর পালিয়ে যান। বুধবার (১২ এপ্রিল) রাতে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার হাসারা দক্ষিণ লস্করপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পিবিআই জানিয়েছে। গ্রেপ্তার হাসান আকন্দের (২৭) বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মাঝপাড়ায়। নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলায় স্ত্রী সর্জিনা আক্তার (২০) ও সাত মাস বয়সী শিশু সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঘাতক হাসান আকন্দ কোনো প্রকার ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতেন না বলেও জানান তিনি।

গ্রেপ্তারের পর হাসান আকন্দ পিবিআই কর্মকর্তাদের জানান, ঘটনার দিন অর্থাৎ গত বছরের ৩ নভেম্বর রাত ৮টার পর সর্জিনা কর্মস্থল থেকে এবং হাসান রিকশা চালিয়ে বাসায় আসেন। এসময় বাসায় সর্জিনা আক্তারের মামা আসেন। সর্জিনা আক্তার স্বামী হাসানকে মামা শ্বশুরের জন্য নাস্তা আনতে বলেন। পরে মামা শ্বশুর ৫০০ টাকা চাইলে সর্জিনার মাধ্যমে ১০০ টাকা দেন। সর্জিনার মামা চলে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে আপ্যায়ন এবং টাকা দেওয়ার বিষয় নিয়ে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে হাসান তার স্ত্রী সর্জিনাকে ধাক্কা দেন। এতে সর্জিনা দেওয়ালে আঘাত পেয়ে ফ্লোরে পড়ে যান। এসময় স্বামী হাসান তার স্ত্রীর বুকের উপর বসে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে সে হাসান রাত ৩টার দিকে ওই ভবনের ছাদে রক্ষিত পানির ট্যাংকের ভেতরে সর্জিনার মরদেহ রেখে আসে। পরদিন বাসার আশপাশের লোকজনকে হাসান জানায় স্ত্রী তার সঙ্গে ঝগড়া করে বাসা থেকে চলে গেছেন। ওইদিন থেকে স্বাভাবিকভাবে রিকশা চালাতে যান হাসান। তবে ওইদিন সন্ধ্যায় বাসায় আসার পর তার মনে সন্দেহ হওয়ায় সে বাচ্চাকে রেখে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দ্যেশে চলে যান।

পর দিন ৫ নভেম্বর ওই ভবনের পানির ট্যাংক থেকে পোশাক শ্রমিক সর্জিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ভিকটিমের খালা স্মৃতি বেগম বাদী হয়ে ইপিজেড থানায় হাসান আকন্দের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এরপর পিবিআই মেট্রো ছায়া তদন্তে নেমে বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে হাসানের সাময়িক অবস্থান ঢাকা, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। তবে সুচতুর হাসান আকন্দ ঘনঘন অবস্থান পরিবর্তন করে মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার হাসরা দক্ষিণ লস্করপুর এলাকার আবুল হোসেনের গরু ফার্মে চাকরি শুরু করেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয় এবং বুধবার (১২ এপ্রিল) তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅসহনীয় গরম আজও ঝড়বৃষ্টির আভাস নেই
পরবর্তী নিবন্ধবাংলা নববর্ষে তথ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা