চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) বিশ্ব স্ট্রোক দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল সোমবার সকালে চমেকের শাহ আলম বীরউত্তম মিলনায়তনে বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া সেমিনার পরবর্তী বর্ণাঢ্য র্যালি চমেক হাসপাতালের আশপাশে প্রদক্ষিণ করে। চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
সেমিনারে মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চমেক হাসপাতাল নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বেলাল হোসেন। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, জীবনযাপনের পরিবর্তন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণে স্ট্রোক বাড়ছে। স্ট্রোকের চিকিৎসা শতভাগ নিরাময়যোগ্য না হলেও নিয়মতান্ত্রিক চলাফেরা করে সুস্থ থাকা সম্ভব। দুই ধরনের স্ট্রোক রয়েছে। এর মধ্যে ৮৬ শতাংশ হলো ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং ১৪ শতাংশ হলো হেমোরজিক স্ট্রোক।
চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জসীম উদ্দিন, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন, চমেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলাম, নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সানাউল্লাহ শামীম, নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাশ, অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার, অধ্যাপক ডা. প্রদীপ কায়স্থগীর, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহিতুল ইসলাম, ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, ডা. মো. সালাউদ্দিন, ডা. মসীহুজ্জামান আলফা, ডা. তৌহিদুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. একরামুল আজম, ডা. শামসুল আলম, ডা. হুমায়ুন কবির, ডা. প্রিয়তোষ দাশ, ডা. নাঈমা মাসরুরা, রেজিস্ট্রার ডা. সামী এম আদনান, ডা. পীযুষ মজুমদার। সেমিনারে বক্তারা বলেন, স্ট্রোক হলে দেরি না করে রোগীদের অবশ্যই স্ট্রোক সেন্টারে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ব্রেনের কোষ মারা যায়। এতে মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়। পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন রোগী মারা যায়। সময়ের সাথে সাথে স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি ওয়ার্ডের রোগী ভর্তির পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই সেটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। স্ট্রোকের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী। তবে বর্তমানে নিউরোলজি ওয়ার্ডে আধুনিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ৩ ঘণ্টার মধ্যে নিউরোলজি ওয়ার্ডে এলে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। ইতোমধ্যে ২০ জন রোগীকে এই থেরাপি দেয়া হয়েছে। সফলতার হার ৯০ শতাংশের ওপরে।