কেউ স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে অবহেলা না করে দ্রুত হাসপাতাল কিংবা স্ট্রোক সেন্টারে নিয়ে যাওযার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। গতকাল সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) শহীদ শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সভায় চিকিৎসকরা এ পরামর্শ দেন। চমেক হসাপাতালের নিউরোলজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত সভা শেষে একটি একটি শোভাযাত্রা হাসপাতালের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
‘একসাথে আমরা স্ট্রোকের চেয়ে বড়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্ট্রোক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ক মূল বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন–স্ট্রোকের কোনো চিকিৎসা নাই, এটি আসলে ভুল ধারণা। স্ট্রোকের চিকিৎসা যত আগে শুরু করা যায়, রোগীরা তত বেশি উপকৃত হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে অদূর ভবিষ্যতে স্ট্রোক রোগী কমবে না, বরং বাড়বে। তবে কেউ স্ট্রোক আক্রান্ত হলে দেরি না করে সরকারি হাসপাতাল কিংবা স্ট্রোক সেন্টারে নিয়ে যেতে হবে। কারণ স্ট্রোক পরবর্তী প্রতি মিনিটে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ব্রেনের কোষ মারা যায়। এতে মস্তিস্কের স্থায়ী ক্ষতি হয়।
তিনি আরো বলেন, পুরো বিশ্বে প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন লোক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রতি ছয় সেকেন্ডে একজন রোগী মারা যায়। স্ট্রোক রোগীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। কারণ স্ট্রোকের চিকিৎসা খুবই দীর্ঘমেয়াদী। তবে বর্তমানে আমাদের নিউরোলজি ওয়ার্ডে আধুনিক চিকিৎসা শুরু করেছি। স্ট্রোকের লক্ষণ শুরু হওয়ার ৩ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ওয়ার্ডে আসলে থ্রম্বোলাইটিক থেরাপির মাধ্যমে স্ট্রোক সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। ইতোমধ্যে আমরা ৮ জন রোগীকে আইভি থ্রম্বোলাইসিস দিয়েছি। যা শতভাগ সফল হয়েছে। রোগীরা সুস্থ জীবন যাপন করছেন।
চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের উপ–পরিচালক ডা. অংসুইপ্রু মারমা ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিউলি মজুমদার। অনুষ্ঠানে ‘আজকের সচেতনতা, আগামী দিনের প্রতিরোধ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডা. রুশমিলা ফেরদৌস। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাশ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহিতুল ইসলাম, ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, ডা. মো. সালাউদ্দিন, ডা. মসিহুজ্জামান আলফা, সহকারী অধ্যাপক ডা. জামান আহম্মদ, ডা. আনোয়ারুল কিবরিয়া, ডা. একরামুল আজম শাহেদ, ডা. সীমান্ত ওয়াদ্দাদার, রেজিস্ট্রার ডা. পীযুষ মজুমদার, আইএমও ডা. অমিত দে, ডা. হামিদ হাসান, ডা. মো. আবদুল্লাহ জোবায়ের, ডা. এসএম শওকত আলী, ডা. অদিতি দাশ, ডা. মো. আবদুল বাসেত হাসান ও ডা. কানিজ ফাতেমা রুদবা।