স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানির তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ at ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিন আসামি হলেন, এসএওসিএলের ব্যবস্থাপক মো. মোশারফ হোসেন এবং প্রতিষ্ঠানটির হিসাব ও নিরীক্ষার ব্যবস্থাপক বেলায়েত হোসেন ও উপব্যবস্থাপক মো. আতিকুর রহমান।

মামলার এজাহারে বলা হয়, এসএওসিএলের প্রয়াত পরিচালক মাঈন উদ্দিন আহম্মেদ একই সঙ্গে এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এওসিএল) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ছিলেন। কোম্পানি আইন, ১৯৯৪এর ১০৫ ধারায় একজন পরিচালক তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে অংশ নিতে পারেন না। কিন্তু মাঈন উদ্দিন আহম্মেদ আইন ভেঙে নিজ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসএওসিএল থেকে বাকিতে লুব্রিকেটিং অয়েল কেনেন। এসএওসিএলকে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য প্রতি বছর চেক দিয়েছে এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড উল্লেখ করে বলা হয়, কিন্তু চেকগুলো ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়নি। অথচ কোম্পানির হিসাব বইয়ে সেই চেকগুলো জমা হয়েছে বলে দেখানো হয়। পরে চেক ফেরত দেখিয়ে টাকা অনাদায়ি রাখা হয়। তিন কর্মকর্তার পাশাপাশি মঈন উদ্দিন আহম্মেদও এ ঘটনায় জড়িত। তবে গত ২৬ এপ্রিল তিনি মারা যান। যার কারণে তাকে আসামি করা হয়নি।

এজাহারে বলা হয়, এসএওসিএল এর ব্যাংক একাউন্টে চেকগুলো জমার বিষয়টি উল্লেখ করা হলেও জমা স্লিপে জমা প্রদানকারীর কোন স্বাক্ষর নেই। এমনকি জমার স্বপক্ষে ব্যাংক কর্মকর্তারও কোন স্বাক্ষর নেই। এতে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, চেকগুলো আদৌ ব্যাংকে জমা করা হয়নি। অথচ পরবর্তী অর্থবছরে চেকগুলো ব্যাংক থেকে প্রত্যাখাত হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে কোম্পানী কর্তৃক এওসিএল’র বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই ফেরত ভাউচারের মাধ্যমে এওসিএলকে ফেরত দেয়া হয়, যা গুরুতর আর্থিক অনিয়ম। এজাহারে বলা হয়, কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ এর ধারা ১০৫ লক্সঘন করে অংশীদার কর্তৃক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ, নিগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এ্যাক্ট, ১৮৮১ এর ধারা, ১৪০ মোতাবেক মামলা না করা, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা, পরিচালনা পর্ষদ ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিপিসির নজরদারীর অভাব এবং কোম্পানীর কর্মকাণ্ডে বেসরকারি প্রতিনিধিদের প্রাধান্যতা সুস্পষ্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম১ এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে মঈন উদ্দিন আহমেদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এওসিএল) এর কাছে বাকীতে লুব্রিকেটিং অয়েল বিক্রয়, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এসএওসিএল) এর পাওনা বাবদ পরিশোধের জন্য প্রদানকৃত চেক ব্যাংকে জমা না করেই ব্যাংক বুকে জমা দেখানো, এরপর সংশ্লিষ্ট বিল/ভাউচারসমূহ প্রস্তুতসহ স্বাক্ষর করার মাধ্যমে মোট ১১৯ কোটি কোটি ২৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮৪৯ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এরপর অসৎ উদ্দেশ্যে উক্ত টাকা অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তর ও পরিবর্তনের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করা হয়। যা দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫() যারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪() ও ৪() ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সুযোগ নাই : খসরু
পরবর্তী নিবন্ধট্যাংকে ক্যালিব্রেশনে গোলমাল করে এক লাখ লিটার তেল গায়েব