টেকনাফ উপজেলার খারাংখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী নুরুল আলম (৩৪) আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আত্মহননের আগে তিনি একটি চিরকুট লিখে গেছেন বলে জানা গেছে।
নিহত নুরুল ইসলাম হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নাছের পাড়ার আবু বক্করের ছেলে। গতকাল সোমবার সকাল ১১টার ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের বরাতে গিয়াস উদ্দিন বলেন, সকালে প্রতিদিনের মত বাড়ি থেকে স্কুলে যেতে বের হন নুরুল আলম। কিন্তু ৯ টার পরও স্কুলে দেখতে না পেয়ে শিক্ষকরা তার খোঁজ নিতে থাকেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা স্কুল ভবনের দ্বিতীয় তলায় উঠার সিঁড়ির গ্রিল ভেতর থেকে তালাবদ্ধ দেখে শিক্ষকদের অবহিত করে। শিক্ষকরা দীর্ঘ সময় ধরে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে গ্রিলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের মেঝেতে গলায় পেঁচানো অর্ধছেঁড়া রশিসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
ওসি বলেন, ঘটনাটি অবহিত করলে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। এ সময় তার শার্টের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ ধারণা করছে, ফ্যানের সাথে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এক পর্যায়ে রশিটি ছিঁড়ে গেলে তিনি মেঝেতে পড়ে যায়। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হন।
এদিকে পুলিশের উদ্ধার চিরকুটের একটি কপি গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে আসে। চিরকুটে লিখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার পরিবার, আত্মীয়–স্বজন ও আমার স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউ দায়ী নয়। শুধুমাত্র আমার চাকুরিটা (চাকুরিই) হচ্ছে, আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। কী কারণে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে পুলিশ নিশ্চিত নয় জানিয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, চিরকুটের লেখার সাথে বিভিন্ন সময়ে নুরুল আলমের লেখাগুলোর পর্যবেক্ষণ করে দেখা হয়েছে। এতে চিরকুটের লেখার সাথে তার হাতের লেখার প্রাথমিকভাবে মিল পাওয়া গেছে। চূড়ান্তভাবে পরীক্ষার পর নুরুল আলমের নিজ হাতে লিখা কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, পারিবারিকভাবে হতাশার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। তারপরও ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। মৃতের ছোট বোনের জামাতা ও স্থানীয় সংবাদকর্মী হুমায়ুন রশিদ বলেন, স্কুলে চাকুরির পাশাপাশি নুরুল আলম পারিবারিকভাবে অনেক অভাব অনটনে ছিলেন। এমনকি তার সাথে স্থানীয়ভাবে কারও সঙ্গে কোন ধরণের বিরোধও ছিল না। তার আত্মহত্যা নিয়ে তারাও হতবাক।