নগরের ও আর নিজাম রোডের মক্কী মসজিদের পাশে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে নির্মাণ করা সেই দোকান দুটি আবারও উচ্ছেদ করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গতকাল মঙ্গলবার পরিচালিত এ উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোয়েব উদ্দিন খান। এক বছর আগেও উচ্ছেদ করা হয় দোকান দুটি। কিন্তু উচ্ছেদের কিছুদিনের মধ্যে আবারও নির্মাণ করা হয় সেগুলো। ফলে এবার উচ্ছেদের পর নতুন করে আবারও দোকান নির্মাণ করা হতে পারে; এমন সংশয় প্রকাশ করেছেন নগরবাসী।
এ প্রসঙ্গে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, নগরবাসীকে এতটুকু আশ্বস্ত করতে পারি, উচ্ছেদ করা জায়গায় বাণিজ্যিক কোনো কিছু হবে না। নতুন করে আর কোনো দোকান সেখানে আমরা নির্মাণ করতে দিব না। জায়গাটিতে আমরা ফুলের বাগান করে দিব। দুয়েকটি বসার সিটও থাকবে। আগে সৌন্দর্যবর্ধনের নামে বাণিজ্য হয়েছে, এখন প্রকৃত অর্থেই সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, তারা (যারা দোকান নির্মাণ করে) উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ আনে। সেটার বিরুদ্ধে আমরা আপিল করি। রায় আমাদের পক্ষে আসায় উচ্ছেদ করি। গতকাল উচ্ছেদকৃত দোকান দুটি হচ্ছে ফ্রেশ ফুড এন্ড রেস্টুরেন্ট এবং শ্রেষ্ঠা মেডিসিন কর্ণার। সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় দোকান দুটি নির্মাণ করে গ্রিড এ ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং। চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে গ্রিড এ ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে চসিক। পাঁচ বছর মেয়াদি ওই চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটি মক্কী মসজিদের পাশে নির্মাণ করে দুটি দোকান। ফলে সেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের চেয়েও প্রাধান্য পায় বাণিজ্যিকীকরণ। এতে অনেকটা নীরব সম্মতি ছিল তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছিরের। ফলে নগরজুড়ে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা থাকলেও দোকান উচ্ছেদে কোনো উদ্যোগ ছিল না চসিকের।
এরপর ২০২১ সালে মেয়র পরিবর্তন হলে দোকান উচ্ছেদে উদ্যোগ নেয় চসিক। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ তখনো বহাল থাকায় উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। পরে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি দোকানগুলো উচ্ছেদ করে চসিক। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে একই জায়গায় আবার বাণিজ্যিকভাবে দোকান নির্মাণ করে গ্রিড এ ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং।
চসিক এবং গ্রিড এ ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং সূত্রে জানা গেছে, চসিকের উচ্ছেদ ‘আইন বহির্ভূত’ দাবি করে ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট করেন গ্রিড এ ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারিংরে স্বত্বাধিকারী সুমন বসাক। আদালত তিন মাসের জন্য উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেয়। এরপর ২৮ মে আবারও আবেদন করেন সুমন বসাক। এবার ৬ মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়। সর্বশেষ ২১ অক্টোবর পুনরায় আবেদন করলে আবারও ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
গতকাল পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের পেশকার মো. জয়নাল আজাদীকে বলেন, সকাল থেকে অভিযান শুরু হয়। যেসব স্থাপনা ছিল তা উচ্ছেদ করা হয়েছে।